শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ

শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ হয়ে থাকে। যারা শসা চাষ করে থাকে সাধারণত তাদেরকে শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখতে হয়। যদি এই রোগটি সম্পন্ন জমে যায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে কখনোই ভালো ফলন পাওয়া যায় না। এই আর্টিকেলে শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ

শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ

আমাদের সবার কাছে শসা হলো খুবই পরিচিত একটি সবজি। শসার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান সাধারণত এই উপাদান গুলো যদি নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে। যারা শসা চাষ করে থাকে সাধারণত তারা জানে যে শসা গাছের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ।

আরো পড়ুনঃ মসুর ডালের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আমার প্রিয় কৃষক ভাইরা আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ হয়ে থাকে মোজাইক ভাইরাসের কারণে। সাধারণত পাতা কোকড়ানো রোগ এটি একটি ভাইরাস জনিত সমস্যা। আমরা জানি যে আমাদের ফসলের জমিতে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এসে বসে। সাধারণত এই পোকামাকড় এর মাধ্যমে এ ভাইরাস গুলো ছড়িয়ে পড়ে।

কোন পোকা যদি মোজাইক ভাইরাস আক্রান্ত কোনো কাছে বসে থেকে এরপরে অন্য জমিতে গিয়ে ভালো কোন শসা গাছের পাতার উপরে বসে তখন সেই ভাইরাস সেই গাছের পাতাতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ পাতা শুকিয়ে যেতে থাকে। সাধারণত এই ভাইরাসজনিত কারণেই শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ হয়ে থাকে।

শসার পাতা কোকড়ানো রোগের লক্ষণ

আমরা যারা নতুন শসা চাষ করে থাকি সাধারণত তারা শসার পাতা কোকড়ানো রোগ সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখি না। তবে শসার পাতা কখনো রোগের বেশি কিছু লক্ষণ রয়েছে। আমরা যদি এ লক্ষণগুলো জেনে রাখতে পারি তাহলে খুব সহজেই এই রোগ নির্ণয় করতে পারব। যদি সঠিক সময় রোগ নির্ণয় করা না হয় তাহলে এই রোগ ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ জমিতে ছড়িয়ে পড়বে।

সাধারণত শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ হলে গাছের পাতাগুলো কুকড়ে যেতে থাকে এবং পাতার আকার ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকে। সাধারণত এটি এ রোগের প্রধান লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়। যখন দেখবেন আপনার জমিতে কোন গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে অথবা ছোট হয়ে যাচ্ছে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার সেই গাছটি পাতা কোকড়ানো রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

এরপরে এ রোগের আরও একটি প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল ধীরে ধীরে গাছের পাতাগুলো হলুদ হয়ে যায়। সাধারণত যে পাতাগুলো বয়স্ক ওইগুলো শক্ত হয়ে যায় এবং মচমচে হয়। এছাড়া শসা গাছগুলো ধীরে ধীরে খাটো হতে থাকে। সাধারণভাবে শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগে আক্রান্ত হলেই এই লক্ষণগুলো দেখা যায়। সাধারণত এই লক্ষণগুলো দেখেই আপনাকে প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হবে।

শসার পাতা কোকড়ানো রোগের প্রতিকার

গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো এ রোগ হওয়ার সাথে সাথে আপনাকে এটি প্রতিকারের উপায় খুঁজতে হবে। কারণ সঠিক সময়ে যদি এই রোগ প্রতিকার করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ জমিতে এই রোগ ছড়িয়ে যায়। প্রথমে এই ভাইরাস জনিত রোগ একটি গাছে হয়ে থাকে এর পরে পোকামাকড় দ্বারা এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়িয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে আমাদের শসার পাতা কোকড়ানো রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার।

১। এই রোগ প্রতিকার করতে হলে আপনাকে প্রথমে যেই গাছটি আক্রান্ত হয়েছে এবং আপনি নির্ণয় করেছেন সাধারণত সেই গাছটিকে তুলে ফেলে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে অথবা কুড়িয়ে ফেলতে হবে।

২। সাধারণত যে পোকামাকড় গুলোর কারণে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে যেমন সাদা মাছি সাধারণত এগুলোকে প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা

৩। যদি আপনি পোকামাকড় দমন করার জন্য স্প্রে করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে পরের ১৫ দিন শসা খাওয়া এবং বাজারজাত করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪। আপনি যদি এই ধরনের রোগ থেকে আপনার জমিকে মুক্ত রাখতে চান তাহলে একই জমিতে বারবার শসা চাষ করা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে এবং আধুনিক জাতের শসা চাষ করতে হবে।

শসা গাছের রোগ ও প্রতিকার

শসা গাছে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। সাধারণত আমাদেরকে প্রথমেই এই রোগ গুলো নির্ণয় করে এরপরে এই রোগ গুলো প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কারণ সঠিক সময়ে যদি এর প্রতিকার করা না হয় তাহলে সম্পূর্ণ জমি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা যেহেতু শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ সম্পর্কে জেনেছি এখন বাকি রোগ এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে জানব।

শসা গাছের পাতার টার্গেট স্পট রোগ - যদি শসা গাছ এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে পুরাতন পাতাগুলোতে বাদামী রঙের বিভিন্ন ধরনের দাগ দেখা যায়। দাগের কেন্দ্র হালকা পরিমাণে বাদামে কিন্তু বাইরের দিকে গারো বাদামী থাকে। যদি অধিক পরিমাণে আক্রমণ করে তাহলে একসময় গাছ মারা যায়।

সাধারণত এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে আক্রান্ত গাছ সম্পূর্ণ তুলে মাটি চাপা দিয়ে দিতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে চারা রোপন করার সময় আপনাকে রোগমুক্ত বীজ অথবা চারা রোপন করতে হবে।

শসা গাছের শিকড়ে গিট রোগ - সাধারণত এই রোগটি নির্ণয় করার অন্যতম প্রধান লক্ষণ হল আক্রান্ত গাছের শিকড়ে গীট সৃষ্টি হয়। প্রথমের দিকে ছোট ধরনের গিট তৈরি হয় কিন্তু আস্তে আস্তে এটি বড় হতে থাকে এবং সম্পূর্ণ শিকড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত পাতা সবুজ হয়ে গাছের বৃদ্ধি এবং ফুল ধরা কমে যায়।

এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কীটনাশক এবং সার প্রয়োগ করতে হবে জমিতে। এক্ষেত্রে আপনি যদি এরকম নির্ণয় করতে পারেন তাহলে তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার নিকটস্থ কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিবেন।

আমাদের শেষ কথাঃ শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ, শসার পাতা কোকড়ানো রোগের লক্ষণ, শসার পাতা কোকড়ানো রোগের প্রতিকার, শসা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের সকলকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। তাই শসা চাষ করার আগে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার ৩০ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা

এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url