কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ
আমাদের আজকে আটিতে মূল বিষয় হচ্ছে "কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ"। আমরা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করব "ফৌত নামাজের বা কাযা নামাজের বা বাদ পড়া নামাজের কতিপয় মাসয়ালা" নিয়ে। আপনার ধৈর্য সহকারে আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
কোন নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বা ঘুমিয়ে গেলে পরবর্তীতে যে নামাজ আদায় করা হয় সেটাই হচ্ছে কাজা নামাজ। অর্থাৎ কেউ যথাসময়ে নামাজ পড়তে না পারলে বা ঘুমিয়ে গেলে বা ভুলে গেলে অথবা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে যে নামাজ পড়া হয় তাই হল কাজা নামাজ। তবে কাযা নামাজ পড়তে হলে তকবির অনুযায়ী অর্থাৎ প্রথমে ফজর, তারপর যোহর, তারপর আসর, পর্যায়ক্রমে মাগরিব এবং এশার নামাজ আদায় করতে হবে। উল্লেখ যে, কাজা নামাজ যে কোন সময় পড়া যায়। তবে আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমাদের কোন নামাজ কাজা না হয়।
- সূচিপত্রঃ কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ।
- ভূমিকা।
- কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ।
- উপসংহারঃ কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ।
কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ
আমরা পর্যায়ক্রমে "কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ" করছিঃ
১। কাযা নামাজ আদায়ের কোন নির্দিষ্ট সময় নাই। হারাম ওয়াক্ত (নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত) বাদে যে কোন সময় কাযা নামাজ আদায় করা যায়। তবে কাযা নামাজ আদায়ে নিয়ম এই যে, নামাজ ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইবার পরে উহর কারণ দূর হইবার পরেই ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হওয়া নামাজের কাযা আদায় করিতে হইবে।
আরও পড়ুনঃ কাযা নামাজ কি, নিয়ম, নিয়াতসমূহ এবং হাদিস
২। যদি কোন লোকের আছরের নামাজ আদায় করিতে করিতে এইরূপ ধারণা হয় যে, তাহার যোহরের নামাজ কাযা হইয়াছে। আর আছরের নামাজ আদায় করিবার মধ্যে যদি তাহার দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে, তাহার যোহরের নামাজ ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইয়াছে, তখন আছরের নামাজ আদায় করতঃ পূণরায় আছরের নামাজ আদায় করিতে হইবে।
৩। যদি একই ওয়াক্তের নামাজ একাধিক ব্যক্তির ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইয়া থাকে তবে উহা জামায়া'তের সহিত আদায় করা জায়েয আছে।
৪। কাযা নামাজ আদায় করিবার সময় সূরা কেরায়াত পাঠ করিবার কালে মূল নামাজের অনুকরণ করিতে হইবে। সশব্দের কেরাত পড়ার নামাজ হলে সশব্দে কেরাত পড়িবে আর আস্তে কেরাত পড়ার নামাজ হইলে আস্তে কেরাত পড়িবে। তবে চুপে চুপে কেরায়াত পাঠ করা জায়েয আছে।
৫। যদি সফরের সময় কাহারো কছর নামাজ ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইয়া থাকে, তবে বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরে উহাব কাযা কছরই আদায় করিতে হইবে অর্থাৎ চার রাকয়াতের স্থলে দুই রাকয়া'ত আদায় করিতে হইবে।
৬। ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হওয়া নামাযের কাযা প্রকাশ্য স্থানে বসিয়া আদায় না করিয়া একটু নিরালা স্থানে আদায় করা উত্তম হইবে।
৭। ওয়াক্তিয়া নামাজের জামায়াত ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইবার আশংকা হইলে, জামায়া'তে শরীক হইবে। পরে কাযা আদায় করিবে।
আরও পড়ুনঃ মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত - মাগরিবের নামাজের সঠিক নিয়ম এবং নিয়ত
৮। কাযা নামাজ শুধুমাত্র ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ কাযা আদায় করিবে। তবে, সুন্নাতের কাযা আদায় করিলে নফলের ছওয়াব পাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ঈদের নামাজ ওয়াজিব হলেও তা কাযা আদায় করিতে হইবে না।
৯। যদি পাঁচ ওয়াক্তের বেশি নামাজ ফৌত (কাযা/বাদ পড়লে) হইয়া থাকে এবং তা আদায় করিতে গেলে বর্তমানের নামাজ কাযা হইয়া যায়, তাহা হইলে শেষ ওয়াক্তের কাযা পড়ে বর্তমানের নামাজ আদায় করিবে, পরে বাকি কাযা নামাজ পড়িতে হইবে। গাফিলতির জন্য নামাজ কাযা করিলে আল্লাহ মাফ করিবেন না।
১০। কোনো নাবালেগ ছেলে যদি এশা'র নামাজ পড়ে ঘুমায় এবং ফজরের সময় হওয়ার পর ঘুম থেকে উঠে কাপড়ে বীর্যের দাগ দেখিতে পায়, যার ফলে বুঝা যায় যে, তাহার স্বপ্নদোষ হয়েছে তা গ্রহনযোগ্য অভিমত মোতাবেক পুণরায় তাহার এশার নামাজ পড়িতে হইবে। আর যদি ফজরের সময় হওয়ার পূর্বে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে বীর্যের দাগ দেখিতে পায়, তবে সর্বসম্মত অভিমত মোতাবেক এশার নামাজের কাযা পড়িতে হইবে।
উপসংহারঃ কাযা নামাজের কতিপয় মাসয়ালা - ফৌত (কাযা/বাদ) নামাজ।
আমাদের আজকের আর্টিকে মূল বিষয় ছিল "ফৌত নামাজের বা কাযা নামাজের বা বাদ পড়া নামাজের কতিপয় মাসয়ালা"। আশা করছি আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আমরা পর্যায় পরবর্তীতে চেষ্টা করব আরো ভালো ভালো আর্টিকেল আপনাদের উপহার দেয়ার জন্য।
আরও পড়ুনঃ নামাজ ত্যাগ করার পরিণাম এবং ১৫টি শাস্তি
যদি আমাদেরই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার প্রিয়জনদেরকে শেয়ার করবেন বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে তার নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন চলার তৌফিক দান করুন (আমিন)।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url