বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম - Bkash PIN Lock হলে করণীয় ২০২৪

আপনি কি বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করেন? বিকাশ একাউন্ট কি আপনার ব্লক হয়ে গিয়েছে? চেষ্টা করেও আপনি বিকাশ একাউন্ট এর ব্লক খুলতে পারছেন না? বিকাশ একাউন্ট এর ব্লক খোলার নিয়ম খুঁজছেন? এদিকে সেদিকে খোঁজাখুঁজি না করে এই আর্টিকেল টি পড়ুন। তাহলেই আপনার বিকাশ একাউন্ট এর ব্লক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম

আপনার বিকাশ একাউন্টে ব্লক খোলা সম্পর্কে সকল তথ্য একটি আর্টিকেল এর মধ্যেই পেয়ে যাবেন আশা করি। বিকাশ একাউন্টে ব্লক খোলার নিয়ম গুলো যারা জানতে চান আপনারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এবং বিকাশ একাউন্টে ব্লক খোলার নিয়ম গুলো জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম - Baksh PIN Lock হলে করণীয় ২০২৪

বিকাশ কি? 

বর্তমান সময় বিকাশ আমাদের খুবই পরিচিত একটি শব্দ। টাকা পয়সা লেনদেন করার অন্যতম আধুনিক উপায় হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। আর বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম হচ্ছে বিকাশ। বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণে বিকাশের গ্রাহক রয়েছে।

বিকাশ বর্তমানে মানুষের ভালো একটি আস্থার জায়গা দখল করে আছে। বিকাশের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই লেনদেন করতে পারি। তবে  বিকাশ ব্যবহারে অনেকেই বেশ কিছু জটিলতার সম্মুখীন হয়। তার মধ্যে বিকাশ একাউন্টের ব্লক খোলা নিয়ে অনেকেই বিড়ম্বনায় বা দ্বিধার মধ্যে আটকে থাকে। 

যে কারণে বিকাশ একাউন্ট ব্লক হয়

‌১. ভুল পিন কোড কিংবা ভুল পাসওয়ার্ড সাধারণত বারবার ব্যবহার করার কারণেই মূলত বিকাশ একাউন্ট ব্লক হয়। তাই আমাদের উচিত যখন অ্যাকাউন্ট খোলা হয় তখন যে পাসওয়ার্ড বা পিন নাম্বার ব্যবহার করা হয় সেটি মনে রাখা।

তবুও অনেক ক্ষেত্রে একের অধিক বার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন কিংবা নতুন পাসওয়ার্ড সেট করার কিছুদিন পর হয়তো মনে নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বেশি বার ভুল পাসওয়ার্ড বা পিন নাম্বার ব্যবহার করার কারণে অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে।

তবে একাউন্ট ব্লক হয়ে গেলেও একাউন্টে থাকা টাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে। আমরা হয়তো অনেকেই মনে করি একাউন্ট ব্লক হয়ে গিয়েছে হয়তো এখন আর টাকা ফেরত পাব না। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে গেলেও আপনার টাকা একাউন্টে থাকবে। এই বিষয়টা আমাদের জেনে রাখা দরকার। 

‌২. অনেক ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ভুল না হলেও একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। বিকাশ কর্তৃপক্ষের টেকনিক্যাল কিছু বিষয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট সাময়িক ফ্রিজ বা ব্লক করে দিতে পারে।আজকে এই আর্টিকেলে সেইসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে।

‌৩. হঠাৎ করে আপনার একাউন্টে বড় বড় ট্রানজেকশন হলে আপনার একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। সাধারণ তো আমরা বিকাশ একাউন্টে নিজের প্রয়োজন মাফিক ৫০০-১০০০ থেকে শুরু করে ১০০০০-২০০০০ কিংবা এর অধিক লেনদেন করে থাকি। কিন্তু সমস্যা হয় যখনই কম লেনদেন থেকে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক লেনদেন ঘটে থাকে।

‌৪. বিকাশ কোম্পানির কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল স্ক্যামিং । ধরুন আপনি ৫০ হাজার টাকা আপনার বিকাশ একাউন্টে ঢুকিয়েছেন। সেই টাকা কিছুক্ষণের মধ্যেই  দুই তিন ঘণ্টা এর মধ্যেই অনেকগুলো একাউন্টে আপনি সেই টাকা ট্রান্সফার করে দিয়েছেন। এরকম হলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ ভাবে যে আপনার একাউন্টে হয়তো কোন গোলযোগ ঘটেছে সেই হিসেবে আপনার একাউন্টটি ব্লক হয়ে যেতে পারে।

‌ ৫. একই ডিভাইসের মধ্যে কয়েকটি বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করলে মাল্টিপল ডিভাইস এর আওতায় আপনার একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে।

‌৬. একাধিক বিকাশ একাউন্ট একই জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে খোলার চেষ্টা করার কারণে একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু অ্যাপের মাধ্যমে একই পরিচয় পত্র দিয়ে অনেকগুলো একাউন্ট খোলার অপশন থাকলেও এর কারণে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দিতে পারে।

‌৭. যে সিম দিয়ে আপনার বিকাশ একাউন্ট লগইন করা হয়েছিল বা খোলা হয়েছিল সেই সিমটি যদি হারিয়ে যায় কিংবা চুরি হয়ে যায় তখন বিকাশ একাউন্টটি ব্লক হয়ে যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আমরা যদি সিম কার্ডটি রিপ্লেস করি কিংবা চুরি যাওয়া ফোনের জন্য সিম কর্তৃপক্ষ এর কাছে আবেদন করি তাহলে ওই সিমে থাকা বিকাশ একাউন্টটি ব্লক হয়ে যেতে পারে।

অথবা নতুন সিম নেওয়ার কারণে পুরাতন সিমে থাকা একাউন্টটি সাময়িক ব্লক হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বেশ কিছু সিমের জটিলতার কারণে একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে।

আশা করছি আপনারা হয়তো ধারণা পেয়ে গেছেন কি কি কারণে বিকাশ একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে বিকাশ একাউন্ট ব্লক হয়ে যাবার পর তা পুনরায় খুলতে হয়।

বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম

‌বিকাশ একাউন্টে ব্লক খোলার বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে বিকাশ কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল যে কাস্টমার কেয়ার কল সার্ভিস রয়েছে সেটাতে ফোন করা।

বিকাশের কল সার্ভিস এর নাম্বার হচ্ছে 16247 বিকাশের ফোন নাম্বার হচ্ছে 02-55663001 ফোন করে আপনি সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনার একাউন্ট ব্লক হওয়ার সঠিক তথ্য প্রদান করুন এতে করে আপনার বিকাশ একাউন্ট সহজেই ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন করার পর আপনাকে কিছু পার্সোনাল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।

এগুলো সঠিক উত্তর দিতে পারলে আপনার বিকাশ একাউন্ট ফেরত পেয়ে যাবেন। চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি প্রশ্ন বিকাশ কর্তৃপক্ষ কাস্টমার কেয়ারে কল করার পর করতে পারে।

  • আপনার  জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার
  • সর্বশেষ আপনি কত টাকা বিকাশ একাউন্টে লেনদেন করেছিলেন
  • আপনার বাবা মায়ের নাম কি
  • আপনি সর্বশেষ কোন ডিভাইসে বিকাশ অ্যাপটি ব্যবহার করেছিলেন সে বিষয়ে জানতে চাইতে পারে এবং সেই সাথে আইএমইআই নম্বর ও জানতে চাইতে পারে।
  • সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি হচ্ছে আপনার জন্ম তারিখ যেটি আপনার বিকাশ কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে।

এ সকল তথ্যগুলো যদি আপনি দিতে পারেন সঠিকভাবে তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই আপনার বিকাশ একাউন্টের লক বিকাশ কর্তৃপক্ষ খুলে দিবে।

‌যদি কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে তারপরেও আপনার বিকাশ একাউন্টের ব্লক খুলতে না পারেন তাহলে যে কাজ করবেন 

যদি কোন কারনে আপনি বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে একাউন্ট খুলতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আপনারা সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে চলে যাবেন। 

কাস্টমার কেয়ারের যাবার সময় বেশ কিছু ডকুমেন্টস সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন ডকুমেন্টস এর মধ্যে অন্যতম হলো আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।  বিকাশ একাউন্টটি যেই সিম দিয়ে খোলা হয়েছিল সেই সিমটি। 

এবং আপনার বাড়ির অথবা প্রতিষ্ঠানের ইউটিলিটি বিল কিংবা আপনার সার্টিফিকেট এসব ডকুমেন্টগুলো নিয়ে সরাসরি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করবেন।

আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত সকল সমস্যাগুলো বিকাশ কর্তৃপক্ষের কাছে কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে যথাযথভাবে বললে সাথে সাথে তারা আপনার বিকাশ একাউন্টটি খুলে দিবে।

সবশেষেঃ বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম - Baksh PIN Lock হলে করণীয় ২০২৪

বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম হচ্ছে বর্তমানে বিকাশ। তাই এটির যেহেতু অধিক পরিমাণে সেহেতু এ নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য বিকাশ কর্তৃপক্ষকে কিছু কঠোর নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয়। এতে করে কাস্টমারের নিরাপত্তাই প্রাধান্য পায়।

এর জন্য সাময়িক কষ্ট হলেও একাউন্টে থাকা টাকার নিরাপত্তার জন্য বিকাশ একাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়। তবে আমরা এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে দেখলাম খুব সহজেই আবার বিকাশ একাউন্ট পুনরুদ্ধার করা যায় ও বিকাশ একাউন্ট ব্লক খোলার নিয়ম

আশা করি সকলে ই বুঝতে পেরেছেন কিভাবে বিকাশ একাউন্টের ব্লক খুলবেন। ধন্যবাদ মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।

বিকাশ একাউন্টে ব্লক খোলার নিয়ম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ বিকাশ একাউন্ট বন্ধ বা ব্লক হয়ে গেলে সেটা কি পুনরায় খোলা সম্ভব?

উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই সম্ভব। বর্তমানে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দান প্রতিষ্ঠান বিকাশ তাদের কার্যক্রম নিরাপদ ভাবে পরিচালনা করার জন্য বিকাশ একাউন্ট সাময়িক ব্লক বা বন্ধ করে দিতে পারে। তবে সেটা পুনরায় বিকাশের অফিশিয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করে খোলা সম্ভব।

প্রশ্নঃ ব্লক হয়ে গেলে কি বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা চলে যায়?

উত্তরঃ না আপনার একাউন্ট ব্লক কিংবা ফ্রিজ হলেও আপনার একাউন্টে থাকা টাকা কোথাও যাবে না। আপনার একাউন্টেই থাকবে।

প্রশ্নঃ বিকাশ একাউন্ট ব্লক হওয়া কি দুশ্চিন্তার কারণ?

উত্তরঃ অবশ্যই না। বিকাশ একাউন্ট ব্লক হলে আপনি নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার একাউন্টটি ফেরত আনতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url