শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না


আজকে আমরা আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না। আপনি কি জানেন শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না? চলুন তাহলে জেনে নেই শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না।

শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না

শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না

ভূমিকা

অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ থেকে শ্বাসকষ্টের শুরু হয়। সাধারণত এজমা রোগীদের খাবার সম্পর্কে সচেতন হতে হয়। এজমা রোগীদের কোন খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট হবে না এবং কোন খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট হবে এইসব বিষয়ে ধারণা থাকতে হয়। যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের প্রক্রিয়াজাত খাবারের তুলনায় সতেজ খাবার খাওয়া উচিত। কারণ প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে।

শ্বাসকষ্টের রোগীরা খাবারের কারণে অনেক সময় শ্বাসকষ্টে বেশি ভোগেন। তাই সঠিক খাবার নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে বিরত থাকতে পারবেন। শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না সে বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে। যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তারা হয়তো অনেকেই জানেন না শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না। এই পোস্টে আমাদের আলোচনা শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা এ বিষয়ে। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়তে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
  • প্রথমে রোগীকে সোজা করে বসিয়ে দিন। এরপর তাকে আতঙ্কিত হতে নিষেধ করুন।
  • এরপর রোগীকে কিছু না জানিয়ে চিকিৎসকের কাছে ফোন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার স্পেসার এর মাধ্যমে টানতে বলুন। এরপর পাঁচবার টান নিতে বলুন। যদি হাতের কাছে স্পেসার না থাকে তাহলে কাগজের ঠোঙ্গা দিয়ে টানতে বলুন।
  • স্পেসারের মধ্যে একবার চাপ দিয়ে পাঁচবার শ্বাস নিতে বলুন। রোগী ঠিকমত শ্বাস নিতে পারছে কিনা জেনে নিন।
  • রোগীর রক্তচাপ বেড়ে গেছে কিনা পরীক্ষা করে দেখুন। যদি রক্তচাপ বেড়ে যায় তাহলে এর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ এবং ঘুমের জন্য রোগীকে পরামর্শ দিন।
  • যদি স্পেসার ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে একবার চাপ দিয়ে পাঁচবার শ্বাস নিতে বলুন। নিকটবর্তী কোন দোকান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবস্থা করুন। এজন্য আগে থেকেই অক্সিজেন সিলিন্ডারে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
  • শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি টান যদি না কমে থাকে তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। সম্ভব হলে নেবুলাইজারের ব্যবস্থা করুন। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার ব্যবহার করা ভালো।
  • কিন্তু যদি প্রথমেই দেখেন রোগীর জিভ এবং আঙুল নীল হয়ে যাচ্ছে, রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে তাহলে দ্রুত হাসপাতাল নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
এভাবে আপনি হঠাৎ কারো শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসা দিতে পারেন।

শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না

হাঁপানি বা এজমা রোগের কারণে অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। আর শ্বাসকষ্ট হলে যেসব খাবার খাওয়া নিষেধ সেগুলো খাওয়া যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না সে বিষয়ে এখন আলোচনা করা হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না। নিচে শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না তা বর্ণনা করা হলো।
  • শুষ্ক ফল এড়িয়ে চলুন: সাধারণত হাঁপানি রোগটি অ্যালার্জির কারণেও হয়ে থাকে। তাই যেসব খাবার খেলে অ্যালার্জি হয় সেসব খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। শুষ্ক খাবারে সালফাইট এর পরিমাণ বেশি থাকে। যা অ্যাজমার সমস্যা বাড়িয়ে দেয় এবং শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। তাই শ্বাসকষ্ট হলে শুষ্ক ফল এড়িয়ে চলুন। এতে করে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে পারবেন।
  • গ্যাস উৎপন্ন করে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন: সাধারণত শ্বাসকষ্ট হলে যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেসব খাবার থেকে বিরত থাকুন। বিন জাতীয় সবজি, রসুন, আচার ইত্যাদি খাবার খেলে গ্যাস হয়। পেটে গ্যাস বেশি হলে তার ডায়াফ্রাম এর উপর চাপ প্রয়োগ করে এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাই শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই গ্যাস উৎপন্ন করে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থেকে দূরে থাকুন: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যাজমা রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন।
  • চা ও কফি থেকে দূরে থাকুন: চা ও কফিতে স্যালিসাইলেট জাতীয় উপাদান থাকে যা শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই চা ও কফি কম করে পান করার চেষ্টা করুন। চা ও কফি কম করে পান করলে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাবেন।
  • সাপ্লিমেন্ট বা লিকুইড নাইট্রোজেন থেকে বিরত থাকুন: সাপ্লিমেন্ট বা লিকুইড নাইট্রোজেন শ্বাসকষ্টের জন্য ক্ষতিকর। তাই শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে লিকুইড নাইট্রোজেন এর ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যেকোনো ধরনের সাপ্লিমেন্ট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: সাধারণত যেসব খাবারে প্রিজারভেটিভ দেয়া হয় সে সকল খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। প্রিজারভেটিভ মিশ্রিত খাবারে সালফাইট থাকতে পারে যা শ্বাসকষ্টে অনেক ক্ষতিকর। তাই শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে অবশ্যই প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।
  • কৃত্রিম উপাদান মিশ্রিত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: ফুড কালার এবং ফুড ফ্লেভার ইত্যাদি ফাস্টফুড গুলোতে থাকে। এসব খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে। তাই এসব কৃত্রিম উপাদান মিশ্রিত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
  • ঠান্ডা দুধ, পনির, দই এবং আইসক্রিম ইত্যাদি খাবার থেকে বিরত থাকুন: শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না সেগুলোর মধ্যে ঠান্ডা দুধ, পনির, দই এবং আইসক্রিম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাই শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে হলে এসব খাবার থেকে দূরে থাকুন।
  • অ্যালার্জি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন: যেসব খাবার খেলে অ্যালার্জি হয় সে সব খাবার থেকে বিরত থাকুন। ইলিশ মাছ, ডিম, মিষ্টি কুমড়া, গরুর মাংস নারিকেল ইত্যাদি খাবারে অনেকের অ্যালার্জি রয়েছে। এ খাবারগুলো খেতে থাকলে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। তাই অ্যালার্জি জাতীয় সব খাবার থেকে বিরত থাকুন। তাহলে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে পারবেন।
  • চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম এবং কাজুবাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন: অনেকের চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম এবং কাজু বাদামে অ্যালার্জি রয়েছে। আর অ্যালার্জির কারণে অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। তাই শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে এসব খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
উপরোক্ত খাদ্যগুলো শ্বাসকষ্ট হলে না খাওয়াই ভালো। আশা করি আপনারা জানতে পারলেন শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না। এই খাবারগুলো থেকে দূরে থাকলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা কম হবে।

শ্বাসকষ্ট হলে কি ঔষধ খেতে হবে

শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। নিচে শ্বাসকষ্টের কয়েকটি ওষুধের নাম দেওয়া হল। শ্বাসকষ্ট জটিলতা ধারণ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করতে হবে।
  • স্যালমোলিন (ইনহেলার)
  • বেক্সিট্রল (ইনহেলার)
  • ব্রডিল ৪/২
  • মোনাস ১০
  • ফেনাডিন ১২০
  • ডক্সিভা ২০০
  • ডেক্সোভেন ২০০
উপরোক্ত ঔষধ গুলো অবশ্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোন ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।

শেষ কথা: শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা জানলাম শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না এ সম্পর্কে। শ্বাসকষ্ট হলে আপনি কি কি খাবার এড়িয়ে চলবেন তাই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না। যেসব খাবার থেকে শ্বাসকষ্ট হয় সেসব খাবার থেকে বিরত থাকুন।


আমার পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং পোস্টটি পড়ে যদি আপনার উপকার হয় তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। পোস্ট সম্পর্কে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদেরকে জানাবেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url