মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

আপনারা কি মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কিত পোস্টটি আপনাদের জন্য। মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ গুলো জানলে ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়ার আশংকা থাকে। 
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

ক্যান্সার হচ্ছে একটা মরণব্যাধি অসুখ। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ভেতর মুখের ক্যান্সার হচ্ছে অন্যতম। মুখের ক্যান্সার সবচাইতে বেশি সনাক্ত হয় এরকম দেশ গুলোর তালিকার মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে তৃতীয়। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে যদি মুখের ক্যান্সার শনাক্ত করা হয় তাহলে তা নিরাময় করা সম্ভব। মুখের ক্যান্সারে যারা আক্রান্ত হয় তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের বয়স 40 বছরেরও বেশি। এই ক্যান্সারে নারীদের তুলনায় পুরুষেরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ১০টি ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

তাই সকলের ক্ষেত্রেই মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। যে সকল অংশ গুলো আক্রান্ত হবার সম্ভা বনা বেশি থাকে সেগুলোর প্রতি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মুখের যে সকল অংশগুলো ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয় সেগুলো হচ্ছে ঠোঁট, জিহ্বা, মুখের ভেতরের অংশ ও নরম তালু, মাড়ি, গালের ভেতরের অংশ, গলার নিচে অংশ। এসব অংশগুলো আক্রান্ত হবার সাথে সাথেই এর প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

মুখের ক্যান্সারের কারণ

মুখের ক্যান্সারের অনেকগুলো কারণ আছে, যা ডিএনএ তে মিউটেশনের মতন। ডিএনএতে এ ধরনের রোগ প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটায়। দূষণ, সূর্যের রশ্মি, অ্যালকোহল, আর্সেনিক, অ্যাসবেষ্টস, বেনজিন, বিকিরণ, সংক্রমণ, খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থ, তামাকের রাসায়নিক পদার্থ, বেরিলিয়ামের মত ডিএনএতে ব্যাঘাতের অনেকগুলোই কারণ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সবগুলোই মুখের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এছাড়াও দাঁতের যেকোনো ট্রিটমেন্ট করবার সময় ওরাল টিস্যুতে আঘাত লাগার কারণে ও হবার সম্ভাবনা থাকে। অসাবধানতার কারণে জিহ্বা এবং মুখের গালে কামড় লাগার জন্য হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ

এলার্জির জন্য মুখের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। অর্থডোনট্রিক্স ব্রেসেস বা রিটেইনারের আঘাত লাগার কারণে হতে পারে। এছাড়াও এসিডিক খাবার যেমন আপেল, কমলা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি জাতীয় ফল বেশি খাওয়ার কারণে হতে পারে। মানসিক চাপ ও অনেক সময় ঘুম কম হবার কারণেও হতে পারে। এছাড়াও মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হচ্ছে তামাক। গুল, সিগারেট, জর্দা, চুরুট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও মদ্যপান করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণ ও এই ক্যান্সারের ভূমিকা রাখে। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে।

মুখের ক্যান্সারের উপসর্গ

বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ নিয়ে শনাক্ত হতে পারে মুখের ক্যান্সার। যেমন মুখ বা ঠোঁটের দীর্ঘদিনের ঘা, মুখের যে কোন জায়গাতে অস্বাভাবিক কোনরকম গোটা বা পিণ্ড, দাঁত পড়ে যাওয়া, গিলতে যাওয়ার সময় ব্যথা কিংবা অসুবিধা বোধ করা, গলায় কোন ধরনের পিন্ড দেখা গেলে, কান ব্যথা করলে, ওজন হঠাৎ করে কমে গেলে, মুখ, নিচের ঠোঁট, গলা বা গালে অবশ অনুভূতি করা, জিহ্বায় ব্যথা করলে, চোয়ালে ব্যথা কিংবা অবশ ভাব ইত্যাদি মুখের ক্যান্সারের উপসর্গ।

মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা

মুখের ক্যান্সারের কারণ ও উপসর্গ গুলো বিবেচনায় সন্দেহ মনে হলে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ সনাক্ত করে থাকেন। মাথা ও মুখের এক্সরে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যানের প্রয়োজন হবার সম্ভাবনা থাকে। মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতি রোগের অবস্থান, ধরন ও ধাপ ভেদে ভিন্ন। রেডিয়েশন, অস্ত অস্ত্রপাচার ও কেমোথেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। রোগ সঠিক সময় নির্ণয় করা গেলে এবং সময়মতো চিকিৎসা করতে পারলে এই রোগ থেকে নিরাময় সম্ভব হবে।

মুখের ক্যান্সারের প্রতিরোধ

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে। এতক্ষন আমরা ক্যান্সারের কারণ ও উপসর্গ গুলো সম্পর্কে জেনেছি। এখন এর প্রতিরোধ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা সম্পর্কে জানব। ক্যান্সার মোকাবেলা করার জন্য প্রতিরোধই হচ্ছে সেরা কৌশল। কাজেই সিগারেট, পান, সুপারি, গুল, জর্দা সহ তামাকজাত পণ্য গুলো বর্জন করা জরুরী। দাঁতের যত্ন ও ভালোভাবে নেয়া লাগবে। দিনে দুইবার ব্রাশ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ জন্ডিস হলে করণীয় কি কি

সেই সাথে রস মাউথওয়াশের ব্যবহার রপ্ত করা লাগবে। বছরে অন্তত দুইবার দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। মুখে কোন ধরনের ঘা কিংবা আলসার হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রচুর পরিমাণে বাহারি রঙের শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল খেতে হবে। কেননা এই খাবার গুলো শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যান্য রোগের পাশাপাশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি ও অনেকাংশে কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথাঃ মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ, উপসর্গ, চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। 

আজ আর নয়, মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url