ইসমে আজম কি? ইসমে আজম পড়ার সময়। ইসমে আজম এর ফজিলত


ইসমে আজম কি? সকল সমস্যার সমাধানের জন্য আসমাউ হুসনা ও ইসমে আজমের সহজ ইসলামিক ওয়াজাইফের দারুণ প্রভাব রয়েছে। সকল মুসলমান বিশ্বাস করে যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নাম পাঠ করা আমাদের জীবনে খুব ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে।  

ইসমে আজম কি? ইসমে আজম পড়ার সময়। ইসমে আজম এর ফজিলত

সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতিটি নাম আমাদের জীবনে কিছু নির্দিষ্ট প্রভাব ফেলে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে এবং প্রতিটি নাম মানুষের বিভিন্ন সমস্যার জন্য অনেক উপকারী। সকল মুসলমানকে তাদের নামাজের পর প্রতিদিন আসমাউ হুসনা পাঠ করতে হবে। আজ আপনারা  ইসমে আজম কি তা বিস্তারিত জানতে পারবেন।  

সূচিপত্রঃ ইসমে আজম কি? ইসমে আজম পড়ার সময়। ইসমে আজম এর ফজিলত

ইসমে আজম কি?

ইসমে আজম অর্থ হচ্ছে মহান নামসমুহ, একজন মুসলিম সাধক লেখক বলেছেন যে আমাদের জীবনে ভারসাম্য পেতে হলে বহুমাত্রিক ব্যক্তি হওয়ার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর সমস্ত নাম পাঠ করতে হবে। তার মতে প্রতিটি আসমাউল হুসনা আমাদের উপর একটি নির্দিষ্ট ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং আমরা যদি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে চাই তবে আমাদের অবশ্যই সমস্ত আসমাউল হুসনা পাঠ করতে হবে।
মুলত আল্লাহর গুনবাচক ৯৯টি নাম পাঠ করে দোয়া চাওয়ার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ইসমে আজম।ইসমে আজম পাঠ করলে মনের আশা পূরন হয়। সকল সমস্যার জন্য আসমাউল হুসনা ও ইসমে আজম এর ফজিলত অনেক রয়েছে। 

ইসমে আজম কয়টি?।ইসমে আজম আরবি দোয়া 

ইসমে আজম পড়ার সময় অবশ্যই তা সহহি সুদ্ধভাবে পাঠ করতে হবে। আপনারা অনেকেই মনে করেন যে, ইসমে আজম হয়তো একটি নির্দিষ্ট কোন দোয়া। আসলে ইসমে আজম হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার উপকারী নাম যা নিয়নিত পাঠ করে দোয়া করলে সে দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। নিম্নে কয়েকটি ইসমে আজম দেওয়া হলো- 

ইসমে আজম আরবি দোয়া 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ، الْمَنَّانُ، يَا بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারীকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদীআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি, ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল-ইকরা-ম। ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম।                                                                        [সুনানে তিরমিযী, হাদিস:৩৫৪৪]

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্না আসআলুকা আন্না আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতা আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।                                                                                                                                                   [সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ১৪৯৩]

اللَّهُمَّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ ‏‏

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আংতা মান্নানু বাদিয়্যুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।                    
                                                                                                                   [সুনানে নাসাঈ, হাদিসঃ১৩০০]

ইসমে আজম দোয়া বাংলা 

হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দুস্থ বরগাওয়ানীতে ইসমে আজম পাঠ করে দোয়া করে, আল্লাহ তায়ালা তার দোয়া কবুল করেন।                                                                    [মুসনাদে আহমদঃ১২২০৫]

"তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তুমি পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই।"                                                               [১৭ সূরা আল-আম্বিয়া,আয়াত ২২]

ইসমে আজম পড়ার সময়/ইসমে আজম কখন পড়তে হয়?

ইসমে আজম পড়ার সময় হচ্ছে প্রতিদিন ফজরের নামাজ শেষে ৪০ বার করে ৪০ দিন পাঠ করতে পারলে আপনার মনের আশা আল্লাহ তায়ালা পুরন করবেন ইনশা-আল্লাহ। ইসমে আজম কখন পড়তে হয়? এই প্রশ্নের জবাবে আমি বলতে পারি যে, আপনি দ্রুত মনের আশা পূরন করতে প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজের শেষে ইসমে আজম পড়ার সময়।

আপনাদের মধ্যে যারা ইসমে আজম দোয়া বাংলা অথবা আরবীতে পাঠ করতে সহ্মম না, তাদের জন্য আল্লাহর কিছু গুনবাচক মহান নামগুলো যিকির করার মাধ্যমেও দোয়া কবুল হয়। কেননা আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রসংশা পছন্দ করেন। 

ইসমে আজম কখন পড়তে হয়?

তাছারা, আপনারা প্রতিটি নামাজের পর আসমা ই হুসনা বা ইস্মে আজম পাঠ করতে পারেন। প্রতিদিন প্রতিটি নামাজের পর সর্বশক্তিমানের একটি নাম পাঠ করার আরও একটি সমাধান রয়েছে এমনকি আমাদের প্রতিদিনের রুটিন কাজের সময়ও, এই পদ্ধতিতে চক্রটি ৯৯দিনে সম্পূর্ণ হবে।

একজন মুসলমানকে তার সমস্ত সমস্যা সমাধানের জন্য উল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর একটি অনুসরণ করতে হবে, কিন্তু যে একজনের কেবল সমস্ত আসমাউল হুসনার অর্থ জানা উচিত নয়,তার সাথে ইসমে আজম এর ফজিলত এর উপর দৃঢ় বিশ্বাসও থাকতে হবে।  তাই সকল আসমাউল হুসনার অর্থ হৃদয় দিয়ে শেখার চেষ্টা করুন।

ইসমে আজম পড়ার ফজিলত

ইমাম হাকেম আল-কাসেম বিন আব্দুর রহমান বলেন,আবু উমামা হতে বর্নিত, তিনি নবী (সাঃ) হতে বর্ণনা করে বলেন যে, ইসমে আজম তিনটি সূরাতে রয়েছে তা হচ্ছে সূরা বাক্বারায়,সূরা আলে ইমরানে ও সূরায়ে ত্বাহা-তে।                                                                  [আলবানী এর সহীহ হাদীস সিরিজঃ ২/৩৮৩]

ইসমে আজম পড়ার ফজিলত  ইসমে আজম পড়ার সময়ই আপনারা পেয়ে যেতে পারেন যদি তা সহহি ভাবে পাঠ করা যায়। ইসমে আজম পড়ার ফজিলত হচ্ছে- যে ব্যক্তি ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করবে,তার দোয়া অবশ্যই কবুল করা হবে।

শেষ কথাঃ ইসমে আজম কি? ইসমে আজম পড়ার সময়। ইসমে আজম এর ফজিলত

অনুবাদ সহ পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা সকল মুসলমানের মৌলিক দায়িত্ব এবং পবিত্র কুরআনে প্রদত্ত আদেশের অর্থ জানা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা, তাই ভাই ও বোনেরা আবার প্রতিটি শব্দ বোঝার এবং মেনে চলার চেষ্টা করুন পবিত্র কুরআনের।

সকল সমস্যার জন্য আসমাউল হুসনা ও ইসমে আজম এর ফজিলত পড়ার জন্য উপরের দোয়া গুলো নিয়মিত পাঠ করুন। এতোহ্মন ধরে আমদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।   

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url