হেপাটাইটিস বি কেন হয় - হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
হেপাটাইটিস বি কেন হয় - হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
হেপাটাইটিস বি কেন হয়? সাধারণত আমরা অনেকেই এই বিষয়টি জানিনা। হেপাটাইটিস বি হল ভাইরাস জনিত রোগ। যেহেতু আমরা অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হই সাধারণত তাই হেপাটাইটিস বি কেন হয়? এ বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত। এই আর্টিকেলে হেপাটাইটিস বি কেন হয়? বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট হেপাটাইটিস বি কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে করতে হবে।
সূচিপত্রঃ হেপাটাইটিস বি কেন হয় - হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
- হেপাটাইটিস বি কেন হয়
- হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
- হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা
- হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধের উপায়
- আমাদের শেষ কথা
হেপাটাইটিস বি কেন হয়
হেপাটাইটিস বি এই রোগ হেপাটাইটিস ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত এই ভাইরাস আমাদের লিভারে আক্রমণ করে যার ফলে আমাদের লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আমরা এই রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা হেপাটাইটিস বি কেন হয়? সাধারণত এর মূল কারণ সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখেনা।
আরো পড়ুনঃ খুশকি বেশি হওয়ার কারণ কি
হেপাটাইটিস বি যে ভাইরাসের কারণে হয় সাধারণত সেই ভাইরাসকে নীরব ঘাতক বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে আমাদের হেপাটাইটিস বি হতে পারে। যদি আপনি এ ভয়ংকর রোগ থেকে দূরে থাকতে চান তাহলে আপনাকে হেপাটাইটিস বি কেন হয়? এর কারণ পরিষ্কার ভাবে জানতে হবে। কারণ হেপাটাইটিস বি এ ভাইরাস আমাদের শরীরের বিভিন্ন তরল পদার্থ যেমন রক্ত লালা এবং বীর্যের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ইনজেকশন হলো হেপাটাইটিস বি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। আমাদের দেশে ইনজেকশন এর কারণেই এই রোগ বেশি ছড়িয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা ইনজেকশন এর মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করে তারা একটি ইনজেকশন অনেক জন ব্যবহার করে যার ফলে এই ভাইরাস একজনের রক্ত থেকে অন্যজনের রক্তে প্রবেশ করতে পারে।
আবার অনেকের ক্ষেত্রে বংশগত কারণে ও হেপাটাইটিস বি হয়ে থাকে। যদি কোন বাবা অথবা মায়ের এ রোগ থাকে তাহলে তার সন্তানের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার যারা শরীরে ট্যাটু করায় সাধারণত তাদের ক্ষেত্রেও এর সমস্যা হতে পারে। আবার অনেক সময় যৌন মিলন করার পরে বীর্য ভেতরে যাওয়ার হলেও হতে পারে। সাধারণত হেপাটাইটিস হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এগুলো।
হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
উপরের আলোচনায় আমরা হেপাটাইটিস বি কেন হয়? সাধারণত এর কারণ সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয় জেনে এসেছি। এই রোগ কেন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এ বিষয়গুলো জানা হয়েছে। এখন এই রোগ নির্ণয় করার জন্য আমাদেরকে হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে। হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই রোগ নিজে থেকে নির্ণয় করতে পারব।
Symptoms of Hepatitis B |
যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এখন আপনার শরীর সংক্রমণ করে তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এই লক্ষণগুলো দেখা যাবে না। সাধারণত এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রায় এক থেকে দুই মাস পরে হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ গুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকে। আবার অনেক শিশুদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো নাও থাকতে পারে।
১। প্রচন্ড পরিমাণে পেট ব্যথা হতে পারে।
২। হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩। প্রসাব অনেক গারো হয়ে যেতে পারে।
৪। আমাদের শরীরের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা করতে পারে।
৫। শরীরে নিয়মিত জ্বর থাকে।
৬। ক্ষুধা লাগার পরিমাণ অনেক কমে যায়।
৭। লিভারের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৮। শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
৯। বমি বমি ভাব হয় মাঝেমধ্যে বমি হয়।
১০। শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায়।
১১। একটু কাজ করার ফলেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
১২। আমাদের ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়।
হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা
হেপাটাইটিস বি কেন হয়? এর কারণ জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা বের করতে পারবো। যদি আপনার ক্ষেত্রে উপরের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ চিকিৎসক আপনাকে এ রোগ থেকে মুক্ত করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের খুশকি দূর করার উপায়
যদি কেউ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে বেশিরভাগ চিকিৎসকগণ এই সকল রোগীদের ক্ষেত্রে কোন রকম এন্টিভাইরাস ওষুধ দেয় না অর্থাৎ প্রয়োজন হয় না। তবে সবার ক্ষেত্রে এমনটা নাও হতে পারে কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এন্টিভাইরাস ওষুধ দেওয়া হয়। আপনি বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশন এবং মুখে খাওয়া ওষুধ পেয়ে যাবেন।
যদি আপনি হেপাটাইটিস বি সংক্রমণের কারণে মুখের খাওয়া ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনাকে সারাজীবন খেতে হবে। তবে কতদিন খেতে হবে এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। কারণ অনেকেই ক্ষেত্রেই কয়েক মাস খেলেই ভালো হয়ে যায়। যেহেতু এটা লিভারকে আক্রান্ত করে তাই যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে আমাদেরকে সঠিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধের উপায়
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে হেপাটাইটিস বি হলো একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত আমাদের শরীরে যখন ভাইরাস এর সংক্রমণ হয় তখন এই রোগ হয়ে থাকে। তাই আমাদেরকে সর্ব প্রথমে ভাইরাস জনিত সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হবে। যে সকল বস্তুর ওপরে ভাইরাস থাকতে পারে সেই বস্তুগুলো আমাদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে।
যদি আপনার শরীরে হেপাটাইটিস বি সংক্রমণ করে তাহলে আপনাকে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে যদি আপনি বাইরে যান তাহলে মাস্ক পরে যেতে হবে। হাঁচি কাশি হলে অবশ্যই রুমার অথবা কিছু ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু এটা ভাইরাস জনিত রোগ তাই আপনার কাছ থেকে অন্যজনের শরীরে যেতে পারে এই বিষয়টি আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বাইরে থেকে আসার পরে ভালোভাবে হাত মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার হাত অথবা শরীর থেকে এই ভাইরাস দূর হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া যারা এ রোগে আক্রান্ত সাধারণত তাদের থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাহলে আমরা এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারব।
আমাদের শেষ কথাঃ
হেপাটাইটিস বি কেন হয় - হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
প্রিয় পাঠকগণ হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। কারণ এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই নিজেকে এই রোগগুলো থেকে মুক্ত করতে পারব।
আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক নিয়মে কিভাবে খুশকি দূর করবেন
এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত করতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url