বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকা। বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা

বৃষ্টিতে ভেজা নিয়ে বড়দের বকুনি শুনে নাই এমন মানুষ খুজে পাওয়া খুব মুসকিল। সে সঙ্গে জ্বর ও ঠাণ্ডার ভয়তো আছেই। বৃষ্টি পানি হচ্ছে মহান আল্লাহ পাকের নিকট হতে প্রাপ্ত অশেষ রহমত এবং নেয়ামত। স্বচ্ছ এই বৃষ্টির পানিতে pH মান হল 5.0 থেকে 5.5। যা হচ্ছে জমজম কূপের পানির পরেই বৃষ্টির পানির অবস্থান।আমাদের জীবনে বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা  প্রচুর রয়েছে। এর পাশাপাশি বেশ  অপকারিতাও রয়েছে এই বৃষ্টির পানিতে।

পানির অপর নাম হচ্ছে জীবন। সকল উদ্ভিদ, প্রাণি, কিংবা মানুষ, পানি ছাড়া কোন কিছুর জীবই বেঁচে থাকতে পারেনা। বৃষ্টির পানির মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তাঁর সকল শিরস্ত্যকে সৃষ্টিকে সজীব, সতেজ  এবং জীবিত রাখেন। পানি ছাড়া কোন প্রাণ জীবন্ত থাকতে পারে না। তাই বৃষ্টির পানির কোন বিকল্প নেই।আপনি যদি শারিরিক ও মানুষিক ভাবে সুস্থ থাকতে চান তাহলে বৃষ্টির পানি পান করুন, আপনি যদি বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আশা করছি ভাল লাগবে।

বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা। 

বৃষ্টির অভাবে কৃষকদের ফসলের খেত ফেটে চৌচির হয়ে যায়। কৃষকদের ফসল বৃষ্টির অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন কৃষকেরা, তারা হটাস হয়ে যান। তাদের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যায়। রৌদ্রজ্জ্বল তাপদাহে অতিষ্ঠ হয় এই ধরণী। বৃষ্টি পানির স্পর্শ ছাড়া কৃষকদের ফসলসহ অন্যান্য কিছুই পরিপক্ক হয় না। একটু বৃষ্টির জন্য পৃথিবীবাসীদের হাহাকার বেড়ে যায়, আল্লাহর দরবারে একটু বৃষ্টির জন্য ব্যাকুল হয়ে যায় সকলে। প্রাণ হয়ে যায় অতিষ্ঠ। প্রচন্ড গরমের তাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে মানুষ ও প্রকৃতি। তখনই আল্লাহ পাকের অপার মহিমায় বৃষ্টি শুরু হয়। এই বৃষ্টির ফলে বৃষ্টির পানি পেয়ে প্রাকৃতিক উঠে সুজলা-সুফলা। 


মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন- ‘‘তুমি কি দেখনি, নিশ্চয় আল্লাহ আকাশ থেকে পানি অবতীর্ণ করেন, যার ফলে পৃথিবী সবুজ-শ্যামল হয়ে ওঠে? নিশ্চয় আল্লাহ অতি সূক্ষদর্শী ও সর্বজ্ঞ’’ (সুরাঃ হজ, আয়াতঃ৬৩)।

আসুন জেনে নেই বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা কি কি?

  • অতি গরমের পর বৃষ্টি হওয়ায় পরম শান্তির পরশ নিয়ে হাজির হয় কাঙ্খিত শীতল পরিবেশ।
  • বৃষ্টির পানির শীতল ছোঁয়ায় পরিবেশের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হয়।
  • বৃষ্টির পানি পেয়ে সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি সতেজ ও সুফলা হয়ে ওঠে।
  • জলসূক্ষ্ম পোকা, মশা এবং অন্যান্য জীবাশ্ম নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বৃষ্টির পানি পেয়ে অন্য পানির অপচয় হয়না এবং পানি সঞ্চয়ে সাহায্য করে।
  • জন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় মাধ্যম হিসেবে পানি ব্যবহার করা হয়।
  • স্বাস্থ্য বিষয়ক দিক থেকে বৃষ্টির পানি খুবই প্রয়োজন
  • সমৃদ্ধ জীবনের জন্য বৃষ্টির পানি প্রয়োজন।
  • পানির অভাবে প্রাণীদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে। 
  • বৃষ্টির পানির অভাবে শস্য ও ফসলের উৎপাদন প্রভাব পরে।
  • জন-জীবনের জন্য প্রয়োজনী বৃষ্টির পানি।
  • পরিস্থিতি সংরক্ষণে বৃষ্টির পানির গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে বৃষ্টির পানির মূল্য তুলনাহীন।
  • বৃষ্টির পানি সমৃদ্ধ জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে। 
  • এই পানির অভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে। 
  • বৃষ্টির পানির প্রকৃতি ও মানুষের উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
  • বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিক পরিস্থিতি সংশোধন করে।
  • বৃষ্টির পানির প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে অত্যন্ত জরুরী হিসেবে কাজ করে।
  • শস্য ও ফসলের প্রতিফলন বাড়ায় এবং শস্য ও ফসলের ফলন ভাল হয়।
  • বৃষ্টির পানির অভাবে মৌসুমিক প্রবল প্রভাব পড়তে পারে।
  • বৃষ্টির পানির অভাবে মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রভাব পড়তে পারে।
  • বৃষ্টির সময় পরিবেশে যে জলীয় বাষ্প থাকে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
  • বৃষ্টির পানি খুব হালকা এবং অ্যালকালাইন পিএইচ সমৃদ্ধ। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।


আরো পড়ুনঃ আসতাগফিরুল্লাহ অর্থ কি - আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী এবং বাংলা 

বৃষ্টির পানির উপকারিতা।

বাংলাদেশে খুব কম লোকই আছেন, বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে না বা বৃষ্টিতে ভিজেন না। অনেকে হয়ত মনে করেন বৃষ্টির পানিতে ভিজলে সর্দি-কাশি বাধে কিন্ত কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। বৃষ্টির পানি অনেক ঠান্ডা এবং পবিত্র হয়ে থাকে। এজন্য অধিক সময় পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজতে বা বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লে ঠান্ডা লাগতেও পারে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। যাই হোক, বৃষ্টির পানির বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। আসুন জেনে নেই এই বৃষ্টির পানির উপকারিতা সম্পর্কেঃ

১।  চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিকভাবে অ্যালকালাইন থাকে। যা মাথার ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা দূর করে। এই পানি চুলের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে এবং চুলের গোড়া হয় শক্ত করে। আপনি জদি নিয়মিত এই পানি ব্যাবহার করেন তাহলে উল্লেখিত সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। চুলে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের ফলে চুলের রুক্ষতা কমে এবং অধিক উজ্জ্বল দেখায়। এ ছাড়াও বৃষ্টির  পানি মাথায় দিলে খুশকি অবশ্যই  দূর হবে।

২।  উদ্ভিদের জন্য বৃষ্টির পানি।   উদ্ভিদের জীবন গঠন, বংশবৃদ্ধি, জ্ঞান বৃদ্ধি ইত্যাদির জন্য আবশ্যক হচ্ছে বৃষ্টির পানির। উদ্ভিদের জন্য আবশ্যক পরিমাণে বৃষ্টির পানি উপলব্ধ করে। তাদের জীবন সম্পর্কে প্রতিটি বিষয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি করে, পানি শুষ্কতা দূর করে এবং পরিস্থিতি উন্নত করে। পানির অভাবে উদ্ভিদের জীবন দুর্বল, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

 


  প্রাণী জাতিদের জন্য বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানি সম্পূর্ণ প্রাণী জাতের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে, পানি শুষ্কতা দূর করে, পরিস্থিতি উন্নত করে। প্রাণী ও প্রাণী জাতের প্রতি প্রেরণা হিসেবে কাজ করে এবং প্রাকৃতিক বন্ধুত্ব উন্নীত করে। পানিতে পানি জাতিয় প্রাণীদের স্থায়ী অবাসন এবং পানিতে পানি প্রিয় প্রাণীরা অবাধে বাস করতে পারে। বৃষ্টির পানির অভাবে প্রাণীদের মৃত্যুও হয়ে সংখ্যা কমে যেতে পারে।  
৪।  মানসিক অবসাদ মুক্তির জন্য বৃষ্টির পানি। বৃষ্টির পানিতে ভেজার ফলে শরীরে ক্ষরণ হয় এন্ডোরফিন ও সেরাটোনিন হরমোন নামের উপাদান। যার মাধ্যমে দূর হয় মানসিক অবসাদ। এছাড়াও বৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে যে পরিমানের ঘ্রাণ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে তাকে মানুষকে আরও চনমনে ও প্রফুল্ল করে তুলতে সাহায্য় করে। 
৫।  প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য বৃষ্টির পানি। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য বৃষ্টির পানির ভূমিকা অপরিসিম। প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা  এবং গাছের পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক ব্যবসায় এবং অর্থনৈতিক উন্নতি প্রয়োজনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য বৃষ্টির পানি প্রয়োজন। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে পানির মূল্য অপার, গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত জরুরী।  
৬।    বন এবং বাগানের জন্য বৃষ্টির পানি   প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষায় বন ও বাগান রক্ষায় বৃষ্টির পানির ভূমিকা অপরিসিম, গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত জরুরী। বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানি পেয়ে অতি দ্রুত গাছের সজিবতা এবং রুপ বা সুন্দরতা ফিরে পায়। বন ও বাগানের পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজনীয় বৃষ্টির পানি সরবরাহ করে হয়ে থাকে। 
৭।  ভিটামিন বি-১২ এর জন্য বৃষ্টির পানি বৃষ্টির পানিতে রয়েছে হালকা অ্যালকাইন ও বেশ কিছু অণুজীব। এই গুলির মাধ্যমে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করে। এ জন্য বৃষ্টিতে ভিজলে বা বৃষ্টির পানি পান করলে ভিটামিন বি-১২ এর অভাব পূর্ণ হয়। ফলে আমরা সবাই সুস্থ থাকতে পারব ইনশাআল্লাহ।
৮।  কৃষি কাজের জন্য বৃষ্টির পানি  বৃষ্টির পানি কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত জরুরী এবং প্রয়োজনীয়। বৃষ্টির অভাবে ফসলের খেত ফেটে চৌচির হয়ে যায়। কৃষকদের ফসল বৃষ্টির অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন কৃষকেরা, তারা হতাস হয়ে যান। আর তখনই দরকার হয় বৃষ্টির বা বৃষ্টির পানির। শস্য ও ফসলের প্রতিফলন বাড়ায় এবং শস্য ও ফসলের ফলন ভাল হয়। কৃষি কাজের জন্য বৃষ্টির পানি খুবই প্রয়োজন। পানির অভাবে মৌসুমিক ফসলের প্রবল প্রভাব পড়তে পারে।
৯।  পরিবেশ উন্নায়নে বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নায়নে এবং পরিস্থিতি উন্নায়নে সাহায্য করে। বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিক পরিবেশকে খুব মনোরম ও ঠাণ্ডা করে রাখে। শস্য এবং ফসলের উৎপাদনেও বৃষ্টির পানি প্রচুর ভূমিকা পালন করে থাকে।
 
১০।  নদীর জীবন ধারণে বৃষ্টির পানি নদীর জীবন ধারণ, নদীর স্রোত বাড়ায়, নদী ও জলবায়ুর সংরক্ষণে বৃষ্টির পানি সাহায্য করে। বৃষ্টির পানি  ছাড়া নদী আকেবারেই অচল। নদী বৃষ্টির পানি পাওয়ার সাথে সাথেই যেন নতুন করে জীবন ফিরে পেল। বৃষ্টির পানি জলদাব বাড়ায় এবং জলদাবের স্তর উন্নত করে।

১১।  ত্বকের সৌন্দর্যে বৃষ্টির পানি।  ত্বকের সৌন্দর্যে বৃষ্টির পানির ভূমিকা অপরিসীম। বৃষ্টির সময় যে জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পরিবেশে থাকা ক্ষতিকর জীবাণুদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে ত্বক আরও উজ্জ্বল এবং কমনীয় হয়ে ওঠে। যা  দেখতে খুব ভাল লাগে।
 
১২।  শ্বাস-প্রক্রিয়া উন্নত করে বৃষ্টির পানি। শ্বাস-প্রক্রিয়া উন্নত করে বৃষ্টির পানি। বৃষ্টির সময় হাওয়া-বাতাস বিশুদ্ধ থাকায় আমাদের দেহে প্রবেশ করে ফ্রেশ বাতাস। আর এ জন্য আমাদের শ্বাস-প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। 
 
১৩। ব্যাঙের জন্য বৃষ্টির পানি। বৃষ্টি হলেই যেন ব্যাঙেরা নতুন জীবন পায়। ব্যাঙেরা খুব আনন্দ, উল্লাস এবং লাফালাফি করে এই বৃষ্টির পানির পরশ পেয়ে। লাফালাফি করে এক স্থান হতে অন্য স্থানে অতিক্রম করে। এতে যেন তাদের নতুন একটি জীবন ফিরে পেল। পানিতে পানি প্রিয় ব্যাঙেরা অবাধে বসবাস করতে পারে।

 


 

১৪।  কানের সমস্যা দূরী করণে বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানির অন্যতম আরেকটি কার্যকারিতা হলো কানের সমস্যা দূর করা। আপনার কানের যে কোন সমস্যা আছে, বৃষ্টিতে ভিজলে তা অতি তারাতারি ভাল হয়ে যাবে। বৃষ্টির পানি কানের ব্যথা ও ইনফেকশন দূর  করে।
 
১৫।  দেহের টক্সিন উপাদান দূর করনে বৃষ্টির পানি। দেহের টক্সিন উপাদান দূর করনে বৃষ্টির পানির ভূমিকা অপরিসীম। নিয়মিত বৃষ্টির পানি পান করলে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায়। যারফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

১৬।  মনকে খুশি রাখতে বৃষ্টির পানি।  মনকে খুশি রাখতে বৃষ্টির পানিতে ভিজলে সব দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই সুযোগ পেলেই ঝুম বৃষ্টিতে ভিজতে পারেন। তবে ১০-১৫ মিনিটের বেশি সময় ভেজা উচিত নয়। বৃষ্টিতে ভেজার পর অবশ্যই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে হবে। তাতে আপনার শরীর অনেকটা ভাল থাকবে ইনশাল্লাহ।

 


১৭।  চর্ম রোগের সমাধনে বৃষ্টির পানি। বৃষ্টিতে ভিজলে বিভিন্ন চর্মরোগ যেমনঃ চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি অতি তারাতারি ভাল হয়ে যায়। তাছাড়া আমাদের শরীরের খসখসে ভাব দূর করে এই বৃষ্টির পানি।

১৮।  ঘামাচি দূর করতে বৃষ্টির পানি। আপনার যত বেশি ঘামাচি হোকনা কেন, বৃষ্টিতে ভিজলে মুহূর্তের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে এই ঘামাচি। ফলে আপনি থাকবেন শারিরিকভাবে সুস্থ।  

১৯।  শরীরের হজম ক্ষমতায় বৃষ্টির পানি। এই পানিতে পিএইচ লেভেল অন্য পানির তুলনায় অনেক বেশি। তাই অ্যাসিডিটির মাত্রাও কম। আর এ জন্য বৃষ্টির পানি পান করার ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে

২০।  জ্বালা ও ব্যাকটেরিয়া নাশক বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানির কোষে জমে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে ক্লিয়ার করে দেয়। যার ফলে ত্বকের জ্বালা ও ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। 
 
২১। ক্যানসারের জন্য বৃষ্টির পানি।  বৃষ্টির পানিতে থাকা অ্যালকালাইন পিএইচ ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রুখে দেয়। 

বৃষ্টির পানির অপকারিতা

বৃষ্টির পানির নানাবিধ উপকারিতা থাকলেও এর অনেক অপকারিতাও রয়েছে। আসুন বৃষ্টির পানির অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেইঃ 

☝ অধিক বৃষ্টির পানি জমে বন্যার সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষ এবং পশু-পাখির মলমূত্র পানিতে ভেসে     আসে এবং পরিবেশ দূষিত হয়।

☝ বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু, জৈবিক এবং রাসায়নিক পদার্থ প্রবেশ করে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি বয়ে আন্পতে আনতে পারে। 

☝ অধিক বৃষ্টি পানি জমে থাকার ফলে প্রাণী এবং উদ্ভিদের মৃত্যু ঘটে। এতে করে  আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি দেখা যায়। এমনকি অনেক প্রাণীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। যেমনঃ- মাছ, বাঘ, হরিণ ইত্যাদি।

☝ অধিক পরিমাণ বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে জনগণের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পানি বাহিত রোগ যেমনঃ- ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ অন্যান্য রোগ দেখা দেয়।

 ☝ বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে, ফলে পথচারীদের চলাচলে জন্য অসুবিধা সৃষ্টি হয়। 

☝ পানি দূষণের মাধ্যমে পানির কোনো মাইক্রোবিওমে অবৈষ্ট্য সৃষ্টি হতে পারে।

☝ পানিতে হাইড্রোজেন সালফাইড, আর্সেনিক, লেড এবং অন্যান্য ক্ষারমুক্ত পদার্থ থাকতে পারে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

☝ অধিক বৃষ্টি স্থানীয় জলাশয় ও নদীর সাম্প্রদায়িক প্রবেশের জন্য প্রবৃদ্ধির সৃষ্টি করতে পারে, যা জীব জন্তুগুলির জীবনও প্রভাবিত করে।

 বৃষ্টির পানিতে অধিক প্রবেশ করার ফলে সড়ক ও সড়ক সেতুর সঙ্গে মুক্তিযোগ্য মাটি সম্পর্কে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যা বাড়তি ভাঙ্গা এবং বাঁধ ভঙ্গের কারণ হতে পারে। 

☝ অধিক বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে রাস্তা কাদামাক্ত হয়ে যায়। এতে করে জনগণের এবং পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা হয়। 

☝ বৃষ্টির পানিতে অধিক প্রবেশের ফলে পরিবেশে বা জলাশয়ের সাথে সংঘর্ষ ঘটতে পারে, যা পরিবেশের পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। 

☝ অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি প্রবাহের ফলে জমিতে পানির লেভেল উচ্চ হতে পারে, যা কৃষিকাজে হতাশা ও আত্মবিশ্বাস নষ্ট  হতে পারে।

 ☝ বৃষ্টির পানি প্রবাহের ফলে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি হতে পারে, যা জলপ্রবাহের কারণে জলোচ্ছ্বাসের আতুরে প্রভাবিত করতে পারে। 

 বায়ুমণ্ডলের গরমীয়নতা বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে বৃদ্ধি পায়, যা পরিবেশে গ্লোবাল ওজনের বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

☝ অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিক আকর্ষণের ফলে আক্রান্ত হতে পারে সাপ, মাছ, পাখি ইত্যাদি।

☝ জলাশয়ে বৃষ্টির পানির ধারাবাহিকতা বা অনিয়মিত বৃষ্টির ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

 ☝ বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিক সানাইটেশন অপ্রচুর মাত্রায় থাকতে পারে, যা জলজীবনী এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।

 ☝ বৃষ্টির পানি নদী ও হ্রদের স্তর বা মহাসাগরের স্তরের উচ্চতায় উঠে যেতে পারে যা উপ-নদীতে জীবন ও সম্পদ নষ্ট করতে পারে।

 বৃষ্টির পানি বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির অন্তর্ভুক্ত কোন পণ্যের যেমনঃ- কাঠের নকশা, বিদ্যুৎ প্রণালী, আসবাবপত্র, পোশাক, বই, কাগজের পণ্য ইত্যাদির নষ্ট ও ক্ষতি হতে পারে। 

☝ অধিক বৃষ্টির পানি জমার ফলে কৃষকদের ফসল তলিয়ে যায় এবং তাদের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যায়।



আরো পড়ুনঃ ইন্টারনেটে অনলাইন টাকা ইনকাম করার ১০ টি নিশ্চিত উপায়

☝ জলপ্রদূষণের কারণে জীবজন্তু বাস করে এবং প্রাণীগুলির স্বাস্থ্যে ক্ষতি করে।

☝ বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিক সানাইটেশন অপ্রচুর মাত্রায় থাকতে পারে, যা জলজীবনী এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।

সর্বশেষ মন্তব্য। বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা

পৃথিবীর মোট আয়তনের চার ভাগের তিন ভাগই হচ্ছে পানি। মহান আল্লাহ বৃষ্টি বর্ষণের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি দিয়ে এই সুন্দর পৃথিবীকে সজীব করেন, জীবন্ত রাখেন, সকল জীবের বাসযোগ্য পরিবেশ সংরক্ষণ করেন। যা মহান আল্লাহ নিকট হতে বেশ বড় একটি নেয়ামত। আবার তিনিই সজীব স্থানকে মরুভূমিতেও পরিণত করতে পারেন। অতএব, মহান আল্লাহ পাকের নিকট তাঁর এই রহমতের বৃষ্টির পানির জন্য আমাদের সকলের উচিত শুকরিয়া আদায় করা। বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।



আজকের আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি, বৃষ্টির পানির প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অন্যকে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url