মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? আপনি কি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। যদি আপনার জমিতে মোজাইক রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? এ বিষয়গুলো জেনে রাখতে হবে। এই আর্টিকেলে মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
- মোজাইক রোগ কিভাবে ছড়ায়
- মোজাইক ভাইরাস সনাক্তের উপসর্গ
- মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
- মোজাইক ভাইরাস কোন ফসলের রোগ
- আমাদের শেষ কথা
মোজাইক রোগ কিভাবে ছড়ায়
মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? এই বিষয়ে যদি আপনার কোন ধারণা না থাকে তাহলে আপনাকে প্রথমে মোজাইক ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ এই ভাইরাস ছড়ানোর একমাত্র কারণ হলো পোকামাকড়। যদি এই ভাইরাস সম্পূর্ণ গাছে সরিয়ে যায় তাহলে সময় গাছ মারা যেতে পারে। মোজাইক ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়? জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ আবির নামের অর্থ কি - আবির নামের ছেলেরা কেমন হয়
সাধারণত আমরা জানি যে ফসলের পাতাগুলো সবুজ হয়ে থাকে। যদি কোন কারণে আপনি দেখেন আপনার ফসলের পাতাগুলো গারো অথবা হালকা হলুদ হয়ে গিয়েছে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার এই কাজটি মোজাইক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সাধারণত এই ভাইরাসটি আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি প্রধান কারণ হলো জাব পোকা অথবা সাদামাছি।
যেহেতু এটি ভাইরাস জনিত রোগ তাই কোন পোকা যখন কোন আক্রান্ত গাছে বসে থাকে আবার যে গাছ এই ভাইরাসে আক্রান্ত নয় সেই গাছে এসে বস তখন এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে লক্ষণ প্রকাশ পায় না ধীরে ধীরে এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে এবং পাতা হলুদ হতে থাকে। যদি একটি পোকা থেকে এই ভাইরাস ছড়ায় তাহলে ধীরে ধীরে ক্ষতি হতে থাকে।
কিন্তু যদি অনেকগুলো পোকা থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ বাগানে এই রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই যখন একটি কাছে এই রোগ হয়ে থাকে তখন আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আশা করি এই ভাইরাস কিভাবে ছড়ায় তা জানতে পেরেছেন।
মোজাইক ভাইরাস সনাক্তের উপসর্গ
যেকোনো রোগ শনাক্তের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। একইভাবে কোন গাছে যদি মোজাইক ভাইরাস সংক্রমণ হয় তাহলে সেই গাছের বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় ধীরে ধীরে। যদি আপনি মোজাইক ভাইরাস সনাক্তের উপসর্গগুলো জেনে রাখতে পারেন তাহলে খুব সহজেই মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? তা জানতে পারবেন।
১। মোজাইক ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষণ হল ফসলের পাতাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের দাগ দেখা যায়।
২। মোজাইক ভাইরাস সংক্রমণ হলে ফসলের পাতাগুলো হলুদ হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়।
৩। মোজাইক ভাইরাস আক্রমণ করলে পাতাগুলো হলুদ হওয়ার সাথে সাথে আবার অনেক সময় সবুজ বর্ণ ধারণ করে।
৪। সাধারণত এই ভাইরাস আক্রমণ করলে অনেক সময় গাছের শিরা এবং উপশিরা গুলো হলুদ হয়ে যেতে থাকে।
৫। সাধারণত এই ভাইরাস সংক্রমণ করলে লতার পর্ব মধ্যগুলো খাটো হয়ে যাই যার ফলে গাছ ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকে।
আরো পড়ুনঃ শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ
৬। মোজাইক ভাইরাস সংক্রমণ করলে পাতা আকারে ছোট হতে থাকে এবং পাতাগুলো অনিয়মিত হয়ে যায়।
৭। কচি পাতাগুলো ছোট থাকে এবং একসময় শুকিয়ে যাই এবং মারা যাই।
৮। যদি এই ভাইরাস অতিরিক্ত পরিমাণে আক্রমণ করে থাকে তাহলে একসময় পাতা এবং গাছগুলো মারা যায়।
মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
জমিতে যে সকল রোগ দেখা যায় সাধারণত এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মোজাইক রোগ। যদি এই রোগ নির্ণয় করা না হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি সম্পন্ন জমিতে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং গাছগুলো মারা যেতে পারে। তাই মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? সাধারণত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনার পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
১। যদি আপনার জমিতে কোন গাছ মোজাইক ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে আপনাকে উপরের উপসর্গগুলো দেখে গাছটি নির্ণয় করতে হবে। এরপরে সেই গাছটিকে সম্পূর্ণ তুলে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২। যদি প্রাথমিক অবস্থায় থাকে এবং সম্পূর্ণ পাতা হলুদ না হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পাওয়া যায় অবশ্যই এই কীটনাশকগুলো গাছের উপরে স্প্রে করতে হবে। সাধারণত এক্ষেত্রে আপনি সোডিয়াম হাইপোক্লোরেট ব্যবহার করতে পারেন।
৩। যেহেতু এই ভাইরাস জাব পোকার কারণে ছড়িয়ে থাকে তাই এই পোকা প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক যুক্ত স্প্রে পাওয়া যায় একজন ভালো কৃষিবিদের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই এই কীটনাশকগুলো জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
৪। যদি জমি ছোট থাকে এবং সম্পূর্ণ জমি জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে ঢেকে দেওয়া উচিত। এতে করে পোকামাকড় ফসলের হতে পারে না যার ফলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাব না একেবারেই থাকে না।
৫। চারা লাগানোর প্রথম অবস্থায় প্রতিদিন স্প্রে করতে হবে। যেন কোন ধরনের পোকামাকড় এর কারণে রোগ ছড়িয়ে না যায়। সাধারণত এই বিষয়টি লক্ষ্য করে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক যুক্ত স্প্রে করতে হবে।
মোজাইক ভাইরাস কোন ফসলের রোগ
অনেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন মোজাইক ভাইরাস কোন ফসলের রোগ। সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? এই বিষয়গুলো আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি। বিভিন্ন ফসলে এই ভাইরাস সংক্রমণ করে থাকে। এটি একটি মারাত্মক রোগ যদি সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করার না হয় তাহলে সম্পূর্ণ জমিতে ছড়িয়ে যেতে পারেন।
সাধারণত এই ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পেঁপে গাছ, টমেটো, মরিচ, কুমড়া, ভুট্টা, শসা, বেগুন সাধারণত এই ফসলগুলোতে বেশিরভাগ সময় এই রোগ সংক্রমণ করে থাকে। তবে শীতকালের চাইতে গরমের সময় সাধারণত এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। তাই কখনো যদি আপনি উপরের লক্ষণগুলো আপনার জমিতে দেখতে পান তাহলে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।
আমাদের শেষ কথাঃ মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে মোজাইক রোগ কিভাবে ছড়ায়? মোজাইক ভাইরাস সনাক্তের উপসর্গ, মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন? মোজাইক ভাইরাস কোন ফসলের রোগ? সাধারণত এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু আমরা অনেকেই ফসল করে থাকি সেহেতু অবশ্যই আমাদেরকে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ হেপাটাইটিস বি কেন হয় - হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ
এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২০৭৯১
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url