শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন


শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে আপনি কি ভেবেছেন? শীত পরবে মানেই শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন এ বিষয়ে আপনার জল্পনা কল্পনা চলবে শীত শেষ হওয়ার আগ অবদি। শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে হয়তো আপনি বিভিন্ন শিশু বিষয়ক ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে থাকেন। 
শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন

আবার ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে বা গুগল সার্চ দিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করে থাকেন। একজন মায়ের মনে শিশুর যত্ন নিয়ে সবসময় একটা দুশ্চিন্তা কাজ করে। তাই আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে। আপনারা মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র: শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন

ভূমিকা

শীতকাল মানেই রুক্ষ শুষ্ক দিন। আর এই রুক্ষ শুষ্ক শীতকালে কিভাবে আপনার সোনামণির যত্ন নিবেন সে বিষয়ে কি আপনি চিন্তিত। শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন এ বিষয়ে দুশ্চিন্তা আর নয়। ত্বক ভালো রাখতে প্রতিদিন মালিশ করা খুবই জরুরী। হালকা গরম তেল দিয়ে বাচ্চাদের প্রতিদিন মালিশ করলে ত্বকের আদ্রতা যেমন বজায় থাকে তেমনি দেহের রক্ত সঞ্চালন ও ভালো থাকে।

নবজাতকের ত্বকের সমস্যা দূর করতে অলিভ অয়েল তেলটি কার্যকারী। তেল মালিশ শিশুর শরীরের বিভিন্ন ইন্দ্রিয়াকে সক্রিয় করতে সহায়তা করে। মাংসপেশীকে মজবুত করে। নিয়মিত তেল মালিশ শিশুর শরীরের ক্লান্তি দূর করে। এতে শিশুর ঘুম ভালো হয়। এমনকি নিয়মিত তেল মালিশের ফলে শিশুর হাড়ের কাঠামো গঠনে বিশেষভাবে সহায়তা করে।

শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন

জন্মের পরবর্তী সময়ে শিশুর যত্ন নিয়ে একজন মায়ের মনে অনেক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করে। কিভাবে যত্ন নিলে শিশু সুস্থ থাকবে সে বিষয়ে চেষ্টার কোন শেষ নেই একজন মায়ের। আর সেই দুশ্চিন্তা দূর করতে একজন মা বিভিন্ন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অথবা গুগল অথবা ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে নবজাতকের ত্বকের সমস্যা কিভাবে দূর হবে ও শিশুদের জন্য কোন তেল ভালো এ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে।
শুধু তাই নয়, বর্তমান সময়ে শিশুর স্বাস্থ্যজনিত এবং শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে ইউটিউব অথবা গুগল থেকেও আপনারা বিভিন্ন তথ্য খুব সহজেই সংগ্রহ করতে পারবেন। শীতের শুরুর দিকে আপনাদের একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং সম্পূর্ণ শীতের সময় জুড়ে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে । তাই শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন এ বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
  • শিশুকে ঠান্ডা বাতাস ও ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • শিশুদের গামছা, তোয়ালে, রুমাল ইত্যাদি আলাদা রাখতে হবে।
  • শীতে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। গোসলের সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।
  • শিশুদের জন্য কোন তেল ভালো এই বিষয় সম্বন্ধে অনেক মায়েদের মনেই অনেক রকমের প্রশ্ন থাকে। শীতকালে শিশুর গায়ে গোসলের আগে জলপাই তেল অথবা অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করতে হবে।
  • শীতকালে শিশুকে ১০ থেকে ১২ টার মধ্যে গোসল করানো আবশ্যক।
  • শিশুকে তেল মালিশ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিশু আরাম অনুভব করে। কোন রকমের কষ্ট না পায়। নিয়মিত তেল মালিশের ফলে বাচ্চার শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং বাচ্চার ঘুমও ভালো হয়।
  • শীতকালে শিশুকে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন বেবি বডি ওয়াশ বা বেবি সাবান অথবা শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হবে যাতে শিশুর ত্বক ভালো থাকে।
  • নবজাতকের ত্বকের সমস্যা দূর করতে বা শিশুর ত্বক ভালো রাখতে গোসলের পর অবশ্যই বেবি লোশন, অলিভ অয়েল বা বেবি মশ্চারাইচার ব্যবহার করতে হবে না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে।
  • শীত আসার সাথে সাথে শিশুর শরীরে বেশ পরিবর্তন আসা শুরু হয়ে যায়। তাই শিশুর কোমল ত্বকের যত্ন নিতে অবশ্যই ভালো মানের বডি লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
  • ২ বছরের নিচে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন ব্যবহার করবেন না তবে ২ বছরের উর্ধ্বে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে গেলে ভালো ব্রান্ডের গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে। তবে খুব সামান্য পরিমাণে কারণ শিশুদের ত্বক খুবই লাজুক হয়। তবে গ্লিসারিনের পরিবর্তে ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • শূন্য থেকে তিন মাস বয়সের শিশুর যত্নের জন্য যে বিষয়টির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে সেটি হচ্ছে বাচ্চা যেন সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। যে বিছানায় আপনার সোনামণিকে রাখছেন সে বিছানাও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • নিয়মিত শিশুর কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে এবং রোদে শুকিয়ে পরিষ্কার জায়গায় গুছিয়ে রাখতে হবে। এতে নবজাতকের ত্বকের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।
  • নবজাতকের ত্বকের সমস্যা যেন না হয় সেজন্য নতুন কাপড় ধুয়ে পড়াতে হবে।

নবজাতকের ত্বকের সমস্যা

নবজাতকের ত্বকের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে বিভিন্ন শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক গণ বিভিন্ন মতামত দিয়ে থাকেন। এমনকি শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সেই বিষয়েও বিভিন্ন চিকিৎসক গণ বিভিন্ন মতামত পোষণ করে থাকে। ছোট্ট শিশুদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল হয়। নানা কারণে শিশুদের ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ঘাম ও ধূলা ময়লার জন্য ত্বকের লোমকূপ গুলো বন্ধ হয়ে যায়।
শীতে শিশুকে এমন পোশাক পরানো হয় যেন তাপ সহজে বাইরে বের হতে না পারে। শিশুকে এমন পোশাক পরিয়ে রাখলেও অনেক সময় ফুসকুড়ি ঘামাচি ও চুলকানি হতে পারে। এজন্য আপনার শিশুকে সবসময় মোটা গরম কাপড় না পরিয়ে কখনো কখনো হালকা গরম কাপড়ও পরিয়ে রাখুন। শীতকালে সব সময় ঘরের জানালা বন্ধ রাখুন যেন ঘরটা গরম থাকে। আসুন এবার নবজাতকের ত্বকের সমস্যার কিছু সমাধান জেনে নেয়া যাক।
  • ছত্রাকের সংক্রমনের কারণে ডাইপার ফুসকুড়ি হতে পারে। তাই আপনার সোনামণিকে অধিক সময় ধরে একই ডাইপার পরিয়ে না রেখে সময় মত ডাইপার পরিবর্তন করে দিন।
  • নবজাতকের ত্বকের সমস্যার আরেকটি প্রধান কারণ হলো মল এবং প্রস্রাবের সংস্পর্শে আসার কারণে ত্বকের প্রদাহ।
  • ডার্মাটাইটিস ট্রিগার গুলির সংক্রমণ এড়িয়ে চলুন।
  • গোসলের জন্য সর্বোত্তম নিয়ম অনুসরণ করে তারপর গোসল করাতে হবে।
  • শীতে শিশুর জন্য সরিষার তেল খুবই উপকারী। কারণ সরিষার তেল শরীরকে উষ্ণ ও গরম রাখে ফলে ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে শিশুকে সুরক্ষা দেয়।
  • অনেকে মনে করেন নারিকেল তেল শুধু চুলের যত্নের জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। জন্মের পরবর্তী সময়ে শিশুর যত্ন এবং শিশুর জন্য কোন তেল ভালো বা কার্যকরী এ বিষয়ে বহু মায়েদের প্রশ্ন থাকে। তাই আজ মায়েদের বলতে চাই শিশুর ত্বক সহজে নারিকেল তেল শুষে নিতে পারে। শীতের সময় নারিকেল তেল শিশুর শরীরে মালিশের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • সূর্যমুখী তেল ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ। তাই জন্মের পরবর্তী সময়ে শিশুর যত্নে সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে সূর্যমুখী তেল শিশুর ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষভাবে কাজ করে।
  • আয়ুর্বেদিক তেল সম্পর্কে আমরা প্রায় সকলেই কমবেশি জানি। আয়ুর্বেদিক তেলে বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য উপাদান পাওয়া যায়।

জন্মের পরবর্তী সময়ে শিশুর যত্ন

জন্মের সাথে সাথে শিশুকে শুকনো নরম কাপড় দিয়ে আলতো করে মুছে দিতে হবে। তারপর একটি পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে মাথা ও শরীর জড়িয়ে রাখতে হবে। তারপর জন্মের পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল দেরি না করে নবজাতককে মায়ের বুকে দিতে হবে। কারণ মায়ের শরীরের উষ্ণতা নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয়। জন্মের পরবর্তী সময় শিশুর যত্নে এই কথাটি কখনোই ভুলা যাবে না যে শিশুর জন্মের তিন দিনের মধ্যে কোনভাবেই শিশুকে গোসল করানো যাবে না।

জন্মের পর থেকে ২৮ দিন বয়স পর্যন্ত শিশুকে নবজাতক বলা হয়। এ সময় মা ও শিশু দুজনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতককে নিরাপদে রাখতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই। শিশুর জন্মের পর প্রথমে একমাত্র কাজ হল মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো। একটি বাচ্চার জন্মের পর প্রথম এক ঘন্টার মধ্যে যে দুধ পান করানো হয় সেটাকে শালদুধ বলে।
শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন
শালদুধ শিশুর শরীরে প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে। যা শিশুর শরীরে বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বাইরে থেকে এসেই নবজাতক শিশুকে কোলে তুলে নিয়া উচিত না এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বাইরে থেকে আসলে একজন মানুষের শরীরে বিভিন্ন ময়লা ও জীবাণু থাকতে পারে। তাই আগে ভালোমতো পরিষ্কার হয়ে তারপরে একটি শিশুকে কোলে নেওয়া উচিত।

দেড় মাসের শিশুর যত্ন

শূন্য থেকে দেড় মাসের শিশুর যত্ন নেওয়া খুবই সেনসিটিভ একটা বিষয়। দেড় থেকে দুই মাস বয়সী শিশুকে দিনে কমপক্ষে অন্তত আটবার স্তন্যপান করানো উচিত। মাস ভিত্তিক বৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে কখনো কখনো আরও বেশি বার খাওয়ানো উচিত। শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন সেদিকে গুরুত্বারোপ করা খুবই জরুরী।
আবার ততটাই জরুরী দেড় থেকে দুই মাস  শিশুর খাবারের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া। এই বয়সে একজন শিশু যখন সারারাত জেগে থাকে তখন আপনাকে অবশ্যই কিছুক্ষণ পর পর তাকে খাওয়াতে হবে। দেড় মাসের শিশুর যত্নে একটি শিশুর একজন অভিভাবক হিসেবে আপনার সাথে ঘুমাতে পারে সে আপনার প্রতিদিনের লিস্টের সবার উপরে থাকতে হবে।

শিশুদের জন্য কোন তেল ভালো

একজন মা তার নবজাতক শিশুর ত্বকের যত্ন নিয়ে সবসময়ই উৎসুক থাকেন। তাই শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন এ বিষয়ে প্ল্যানিং করতে গেলে প্রথমেই প্ল্যানিং করতে হবে শিশুর জন্য কোন তেল ভালো সে সম্বন্ধে। শিশুর জন্য কোন তেল ভালো স্বাস্থ্যকর ও উপযোগী সেই সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করা হলো:
  • নারিকেল তেল গরম। আদ্র আবহাওয়ায় নারিকেল তেল শরীরের জন্য উপযোগী।
  • একটি নবজাতক শিশুর জন্য অলিভ অয়েল তেল উপযোগী। তাই শিশুর মালিশের কাজে ব্যবহারের জন্য অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দেন অনেক চিকিৎসক।
  • আমরা অনেকেই এই কথা জানিনা যে তিলের তেলও একটি শিশুর জন্য খুবই উপযোগী। তাই তিলের তেল দিয়ে শিশুর শরীর মালিশ করা হলে শিশুর বুদ্ধি বৃদ্ধি হয় এবং রাতে ঘুমও ভালো হয়।

শেষ কথা

এতক্ষণ আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম শীতে যেভাবে আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন, জন্মের পরবর্তী সময়ে শিশুর যত্ন, দেড় মাসের শিশুর যত্ন, শিশুদের জন্য কোন তেল ভালো ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি কতটুকু উপকৃত হলেন কমেন্ট বক্সে জানাবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url