মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?

অনেকে আছে যারা প্রশ্ন করে যে মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে? অর্থাৎ একজন মানুষের কাছ থেকে অন্য মানুষকে এ ধরনের সমস্যা করাতে পারে কিনা। সেজন্য অবশ্যই এই মানুষ গুলোর কাছে সঠিক তথ্যটি পৌঁছে দিতে হবে। কেননা অনেকের মনে করেন মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে? এ ধরনের চিন্তাধারা থেকে ক্যান্সারের রোগীর চিকিৎসাতে অনেক গাফেলতি হয়ে থাকে। তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?
তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই, আসলেই মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?

সূচিপত্রঃ মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?

মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?

আমাদের আজকের এ আর্টিকেলটি মরণব্যধি ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে। সব রোগেরই চিকিৎসা থাকলেও ক্যান্সার একেবারে নির্মূল করা এখন পর্যন্ত কারো পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে এর চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়ে থাকে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর মত অনুসারে, প্রতি ছয়জনের ভেতর একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সঠিক সময়ে ক্যান্সার ধরা পড়লেই এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ২০২৪

তবে এ বিষয়ে অনেকে প্রশ্ন করেন যে মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে? আমাদের মুখের ভেতরে যে নরম আবরণ থাকে, তাকে বলা হয় মিউকাস মেমব্রেন। এই মেমব্রেন ক্ষয় হয়ে যাবার ফলে মুখ গহ্বরে ক্ষত বা ঘা কিংবা আলসারের সৃষ্টি হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে বেশিরভাগই এটা কোন ধরনের ছোঁয়াচে রোগ না। এটা সাধারণত এক ধরনের ক্ষত, যা কেবল মাত্র ব্যাথা যুক্ত হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে অনেক যন্ত্রণাদায়ক ও হয়ে থাকে। এমনকি এ থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কোথায় মুখের ঘা হয়?

মুখের ঘা সাধারণত মুখের ভেতরেই হয়ে থাকে। যেমন গালের নরম মাংসপেশি গুলোতে, মুখের ভেতরে, জিহ্বার একপাশে এই ঘা দেখতে পাওয়া যায়। একটা ছোট্ট গোলাকার অংশ সাদাটে হয়ে শুরু হয়। আর অনেক সময় এই সাদা অংশ টার ভেতর পুজ জমে থাকে। পুজের চার পাশে একটা হালকা সীমানা থাকে। গোলাকার কিংবা ছোট্ট ডিম্বাকৃতির অংশে যা হয়ে থাকে। এই ঘা সাধারণত গালের ভেতরের অংশ ও তালু, জিহ্বা, ঠোট, মুখের মাড়িতে হয়ে থাকে।

কেন মুখের ঘা হয়?

সাধারণত কোন কিছুরির আঘাতের জন্য যেমন দাঁত ভাঙ্গা বা গোড়া, হরমোনের পরিবর্তন বা মানসিক চাপের কারণে মুখের ঘা হয়। সাধারণতা এই ঘা গুলো এমনিতেই চলে যায় বা কোন কোন সময় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তবে বেশিরভাগ সময় ঘা গুলোতে ব্যথা হবার কারণে খেতে, কথা বলতে, পানি পান করবার সময় সমস্যা হয়ে থাকে।

মুখের আলসার কোন কোন সময় ভাইরাসজনিত কারণ বা অটো ইমিউন, যা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যার কারণে হয়। সবচাইতে বেশি হয় এ্যাপ্থাস আলসার। এছাড়াও দেখতে পাওয়া যায়, লিউকোপ্লাকিয়া, ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস, ওরাল থ্রাস, ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া ও মুখের ক্যান্সার।

মুখের ঘা এর কারণ

মুখের ঘার অনেকগুলো কারণ রয়েছে, যা ডিএনএ তে মিউটেশনের মত। ডিএনএতে এ ধরনের রোগ প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটায়। দূষণ, আর্সেনিক, অ্যালকোহল, অ্যাসবেষ্টস, বেনজিন, সংক্রমণ, বিকিরণ, খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থ, সূর্যের রশ্মি, তামাকের রাসায়নিক পদার্থ, বেরিলিয়ামের মত ডিএনএতে ব্যাঘাতের অনেকগুলো কারণ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সবগুলোই মুখের ঘা এর কারণ হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ থানকুনি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি - ৮টি

এছাড়াও দাঁতের যেকোনো ট্রিটমেন্ট করবার সময় ওরাল টিস্যুতে আঘাত লাগার কারণে ও হতে পারে। অসাবধানতার কারণে জিহ্বা ও মুখের গালে কামড় লাগার জন্য হয়ে থাকে। এলার্জির জন্য মুখের ঘা এর কারণ হতে পারে। অর্থডোনট্রিক্স ব্রেসেস বা রিটেইনারের আঘাত লাগার কারণে হতে পারে। এছাড়াও এসিডিক খাবার যেমন আপেল, কমলা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি জাতীয় ফল বেশি খাওয়ার কারণে হতে পারে। মানসিক চাপ ও অনেক সময় ঘুম কম হবার কারণেও হতে পারে।

মুখে ঘা হলে করণীয় ও চিকিৎসা

এতক্ষণ আমরা মুখে ঘা ও ক্যান্সার সম্পর্কে জানলাম। অনেকেই জানতে চেয়েছিল মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে? আসলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবে। এখন আমরা জানবো মুখে ঘা হলে করণীয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে। আমাদের বিভিন্ন অসাবধানতা ও অসতর্কতার জন্য বিভিন্ন কারণে মুখে ঘা হয়ে থাকে। তাই এর করনীয় সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা জরুরী। চলুন মুখে ঘার করণীয় ও চিকিৎসা গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ মুখের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। দৈনিক কমপক্ষে আট গ্লাস করে খেতে হবে।
  • দাঁত ও মুখের সঠিক ভাবে যত্ন করতে হবে।
  • প্রত্যেকদিন লবণ গরম পানি দিয়ে কিছুক্ষণ কুলকুচি করতে হবে।
  • সমপরিমাণ পানির সাথে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এর সাথে পানি মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।
  • গরম, ভাজাপোড়া ও ঝাল যুক্ত খাবার বর্জন করা লাগবে।
  • এনেসথেটিক্স জেল ব্যবহার করতে পারেন।
চিকিৎসাঃ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুখের ঘা আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। ফিজিশিয়ান সাধারণ উপসর্গ নিরাময় করার জন্য ওষুধ দেন। এন্টি সেপটিক জেল কিংবা মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। ইস্টেরয়েড অয়েন্টমেন্ট বেশি গুরুতর হলে ইমিউনো সাপোজিভ ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

শেষ কথাঃ মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে?

মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে? এই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। মুখের ক্যান্সার নিয়ে অবহেলা করে দেরি করা যাবে না। মুখের ক্যান্সারের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের মত অনুসারে জন্য ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে কিনা সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, মুখের ক্যান্সার ছোঁয়াচে কি না সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই মুখের ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url