স্বল্প খরচে উচ্চ বেতনে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়

প্রিয় পাঠকগণ আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে সরকারিভাবে কোন দালাল ছাড়া মাত্র ৮০ হাজার থেকে ০১ লক্ষ টাকায় কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া যায় সেই বিষয়টি নিয়ে। তাই আপনি যদি জানতে চান যে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত (BOESL) এর পক্ষ থেকে বছরের যে কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি সার্কুলার দেওয়া হয় এবং সে সার্কুলার এ উল্লেখ থাকে যে আপনারা যারা দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে আগ্রহী বা আপনারা যারা কোরিয়ান ভাষা পারেন তারা অমুক তারিখ থেকে অমুক তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে। আর এই আবেদন টাকে বলা হয় প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন। 

আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে বলবো স্বল্প খরচে ভালো বেতনে কিভাবে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে পারবেন, কি কি পরীক্ষা আপনাকে দেওয়া লাগবে, দক্ষিণ কোরিয়া যেতে মোট কত টাকা খরচ হবে এবং কোন কোন সমস্যাগুলো আপনার থাকলে আপনি দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারবেন না তার সমস্ত বিষয় নিয়ে। আশা করি পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সাথেই থাকবেন। তবে চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ স্বল্প খরচে উচ্চ বেতনে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়। দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কার্যকারী মাধ্যম ইপিএস EPS এর অধীনস্থ উপায়ে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের আরো ১৬ টি দেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারিভাবে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যে চুক্তিটির নাম ছিল MOU। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে HRD-Korea  কর্মী নিয়োগ পরিচালনা বা প্রক্রিয়ার কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মী প্রেরণ করছে এবং বর্তমান সময়েও এই প্রক্রিয়াটি চালু রয়েছে।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ০১ঃ প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন (pre-registration)

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার প্রথম ধাপটি হচ্ছে প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন করা। আর এই প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনার অবশ্যই একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে। পাসপোর্ট থাকার পাশাপাশি আপনাকে একটা ফর্ম দেওয়া হবে যে ফর্মগুলো আপনাকে ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে। 

এই ফর্মটা আপনি কিভাবে পূরণ করবেন এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আরেকটি নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করব কিছুদিনের মধ্যে তাই আপনি যদি সেই পোষ্টের নোটিফিকেশন পেতে চান তাহলে নিজের বাম পাশে বেল আইকনটি প্রেস করে আমাদের ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। কেননা আজকে আমরা শুধু কোরিয়াতে যাওয়ার যেই ধাপগুলো রয়েছে সেই ধাপগুলো সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব সেই ধাপগুলো এক্স্যাক্টলি ফর্ম গুলো কিভাবে পূরণ করতে হবে হাতে-কলমে তার জন্য আমরা নতুন করে আরো দুই একটা আর্টিকেল পাবলিশ করব ইনশাল্লাহ। 

আপনার যখন ফর্মটা পূরণ করা হবে এরকম ফ্রম কিন্তু আরও অনেকেই পূরণ করে। ধরুন এই বছর মোট ৮০০০ জন কর্মী নিবে কিন্তু আবেদন করছে প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ মানুষ। আর এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয় কম্পিউটারাইজড মাধ্যমে যখন এতজন মানুষ আবেদন করে তখন কম্পিউটারাইজড উপায়ে লটারি করা হয় এবং এই লটারিতে যারা টিকে তাদেরকেই পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া হয়।

মূলত এই লটারিতে যারা উত্তীর্ণ হয় তাদেরকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া হয় আর যারা উত্তীর্ণ হয় না তাদেরকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের এমন অনেক ধোকাবাজ কোচিং সেন্টার রয়েছে বা দালাল চক্র রয়েছে যারা বলবে যে আমরা আপনাদেরকে লটারি কিনে দিতে পারব এত টাকার বদৌলতে। এসব কোচিং সেন্টার এবং দালালদের থেকে অবশ্যই সাবধান থাকবেন। 


যদি কখনো এমন কোন ব্যক্তির পরিচয় পান বা আপনার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে তাহলে সেই ব্যক্তিকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন যাতে করে অন্যান্যরা হেনস্থার শিক্ষার না হয়। আপনার প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে লটারির মাধ্যমে যখন আপনি টিকে যাবেন এর পরবর্তী ধাপে আপনাকে মূল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে আসুন সে সম্পর্কে নিচে জেনে নেই।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ০২ঃ মূল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া 

আপনার প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার এই প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন টাকে মূল রেজিস্ট্রেশনে কনভার্ট করতে হবে এর জন্য BOESL থেকে আপনাকে একটা নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হবে। 

যে তারিখে আপনার পাসপোর্ট এর রঙিন ফটোকপি, আপনার ছবি, আপনার সার্টিফিকেটের ফটোকপি ইত্যাদি আনুষঙ্গিক কাগজপত্র গুলো নিয়ে সশরীরে BOESL কার্যালয়ে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনার মূল রেজিস্ট্রেশনটি সম্পন্ন করতে হবে। 

সাথে একটি পে-অর্ডার কাটতে হয় যার মূল্য ২১০০ টাকা এটি আপনি ঢাকার অধীনস্থ যেকোনো একটি সোনালী ব্যাংক থেকে কেটে নিতে পারেন। আপনার এ পে-অর্ডারটি কাটা হয়ে গেলে আপনার সেই সকল কাগজপত্র সঙ্গে এই পে-অর্ডারটিও আপনাকে BOESL অফিসে নিয়ে যেতে হবে। 

যখন আপনি এই সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে BOESL যাবেন তখন আপনার সিরিয়ালওয়াইজ আপনাকে আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে বলা হবে অর্থাৎ লটারির মাধ্যমে আপনারা যে রেজিস্ট্রেশনটা সম্পন্ন করেছিলেন সেটা ছিল প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন আর এখন যে রেজিস্ট্রেশনটা সম্পন্ন করছেন সেটা হচ্ছে আপনার মূল রেজিস্ট্রেশন।

উচ্চ বেতনে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ০৩ঃ কোরিয়ান ভাষার পরীক্ষা বা Eps-Topic Exam

মূল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর অর্থাৎ সরকারিভাবে কোরিয়া যাওয়ার উপায় এর জন্য যেই মূল রেজিস্ট্রেশনটি সম্পন্ন করতে হয় যখন এই রেজিস্ট্রেশন টি সবার সম্পন্ন হবে তখন আপনাদেরকে কোরিয়ান ভাষার পরীক্ষা দিতে হবে সেটাকে ইংলিশে Eps-Topic Exam বলা হয়। অর্থাৎ আপনি যে কোরিয়াতে যাবেন সেখানে গিয়ে আপনি যেখানেই কাজ করেন না কেন সেখানে গিয়ে তো আপনাকে কথা বলতে পারতে হবে তাদের কথাগুলো বুঝতে পারতে হবে এর জন্যই মূলত এই কোরিয়ান ভাষার পরীক্ষাটি নেওয়া হয়। 

এই পরীক্ষাটি মূলত দুইটি পদ্ধতিতে নেওয়া হয়। যেমনঃ  (১) রিডিং পার্ট ও (২) লিসেনিং পার্ট। কোরিয়ান ভাষার যখন পরীক্ষাটা শুরু হবে তখন এটা আপনাকে আগে থেকে জানিয়ে দেয়া হবে যে কোন সময় থেকে এই পরীক্ষাটা শুরু হবে এবং যখনই পরীক্ষাটা শুরু হবে তখন আপনারা যারা লটারিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ধরুন ৮০০০ মানুষ সে আট হাজার মানুষের পরীক্ষা একসঙ্গে নেয়া হবে। এক্ষেত্রে একটি জিনিস মাথায় রাখবেন কারো কারো পরীক্ষা এক সপ্তাহ পর হতে পারে কারো আবার একমাস পরেও হতে পারে। কেননা ৮০০০ মানুষের একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না তাই না এই জিনিসটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।

আবার ধরেন আপনাদের আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা একটু আলসে তারা ভাবেন যে না আমি আমার পরীক্ষাটা এক সপ্তাহ পরে দেবো বা এক মাস পরে দেব জিনা এই কাজটা করা যাবে না কেননা আপনাকে যেই দিন ডেট দেওয়া হবে আপনাকে ওই ডেটে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে আপনি যদি ওই ডেটে গিয়ে পরীক্ষা দিতে না পারেন তাহলে আপনি আর করিয়ে দিতে পারবেন না। বিষয়টা একদম গেম খেলার মত যে আপনি একটি স্টেপ পার করতে পারলে পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন এবং এই স্টেপটি যদি আপনি ব্যর্থ হন তাহলে আর সামনে যেতে পারবেন না।

স্বল্প খরচে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ০৪ঃ Skill Test

কোরিয়ান ভাষার পরীক্ষায় আপনি যখন উত্তীর্ণ হবেন তখন আপনাকে পরবর্তী ধাপে গিয়ে একটি পরীক্ষা দিতে হবে যেটাকে বলা হয় স্কিল টেস্ট। এই Skill Test পরীক্ষা খুব একটা কঠিন না এই পরীক্ষায় মূলত আপনাকে কোরিয়ান ভাষায় কয়েকটি প্রশ্ন করা হবে যেটার উত্তর আপনাকে দিতে হবে। এরপর আপনাকে আপনার উচ্চতা, আপনার ওজন এসব কিছু দেখা হবে। আর এই  Skill Test পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে কালার বাইন্ড Color Blind টেস্ট। 


অর্থাৎ আপনার চোখে কোন সমস্যা আছে কিনা আপনার দেখতে অসুবিধা হয় কিনা কালারের কোন সমস্যা আছে কিনা এই পরীক্ষাটা আপনাকে দিতে হবে। আর আপনি যদি এই কালার ব্লাইন্ড টেস্টে ফেল করেন তাহলে আপনি আর সামনে যেতে পারবেন না এখান থেকে আপনাকে বাদ করে দেয়া হবে। কালার ব্লাইন্ড মূলত এক ধরনের ছবি যে ছবির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কালার দিয়ে থাকে এবং তার মধ্যে একটি নাম্বার থাকে যে নাম্বারটা আপনাকে আইডেন্টিফাই করতে হবে। কালার ব্লাইন্ড সম্পর্কে আপনি google বা ইউটিউবে যদি সার্চ করেন তাহলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ০৫ঃ  মেডিকেল টেস্ট বা পরীক্ষা 

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়ের এই ধাপে এসে আপনাকে মেডিকেল টেস্ট বা পরীক্ষা করতে হবে। আর এই মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য আপনাকে আপনার হোম ডিস্ট্রিক্ট অর্থাৎ আপনি যেই ডিস্ট্রিক্ট থেকে পাসপোর্ট করেছেন সেই ডিসটিকের সিভিল সার্জন এর কাছে যেতে হবে এবং আপনার বিষয়টা সেই সিভিল সার্জনকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে যে আপনি কেন মেডিকেল করতে চাচ্ছেন। 

তারপর সিভিল সার্জন আপনাকে সেখান থেকে বলে দেবে এবং আপনি মেডিকেল টেস্ট করবেন এবং সেই মেডিকেল টেস্টটা রিপোর্টগুলা সিভিল সার্জন এর কাছে নিয়ে যাওয়ার পর সেই সিভিল সার্জন আপনার রিপোর্টগুলোতে দেখে আপনাকে সিগনেচার করে দেবে এবং এই সমস্ত কাগজগুলো নিয়ে আপনি  BOESL  যাবেন এবং সেখানে এই সমস্ত ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র গুলো জমা দিয়ে দিবেন ব্যাস এখানেই আপনার কাজ শেষ এরপর পরবর্তী যে কাজগুলো সেগুলো বুয়েসেল  BOESL  কর্তৃপক্ষ করবে।

উপরের ধাপগুলো যখন আপনার সম্পূর্ণ শেষ করা হয়ে যাবে এরপর থেকে আপনাকে আর কোন কাজ করা লাগবে না বাকি কাজগুলো বুয়েসেল কর্তৃপক্ষ করবে। এরপরের ধাপে আপনাকে একটা EPS আইডি খুলতে হবে যেমন আমরা ফেসবুক চালাই এই ইপিএস আইডির মাধ্যমে আপনার সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় এর সমস্ত কার্যপ্রণালী গুলো আপনি এই আইডির মধ্যে দেখতে পাবেন। 

এরপরে হবে আপনার রোস্টার অর্থাৎ আপনি যে পাশ করেছেন আপনি যে কোরিয়াতে আসার যোগ্য বা আপনার এই যে ডাটা গুলো রয়েছে এই ডাটা গুলো বাংলাদেশ থেকে কোরিয়াতে পাঠানো হবে অর্থাৎ যখন আপনার এই ডাটা গুলো কোরিয়াতে পাঠানো হবে তখন আপনি রোস্টার ভুক্ত হলেন অর্থাৎ আপনি এখন কোরিয়াতে আসার যোগ্য হলেন। এবং আপনি যে নির্বাচিত হলেন এই নির্বাচিত ডেটটা অর্থাৎ আপনি যদি আজকের দিনে নির্বাচিত হন তাহলে আজকের দিন থেকে আগামী দুই বছর পর্যন্ত এটির মেয়াদ থাকবে। 


অর্থাৎ আপনি রোস্টারভুক্ত হওয়ার পর আপনার মেয়াদ থাকাকালীন অবস্থায় আপনি যে কোন সময় কোরিয়াতে যেতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি আপনার উক্ত সময়ের মধ্যে কোরিয়াতে যেতে ব্যর্থ হন তাহলে দুই বছর পর অটোমেটিকলি আপনার এই রোস্টারটি ডিসএবল হয়ে যাবে যার ফলে আপনি আর কোরিয়া যেতে পারবেন না। 

এরপর যে ধাপটি রয়েছে সেটি হচ্ছে আপনাকে কোন কোম্পানি ইস্যু করবে অর্থাৎ আপনি যে কোরিয়াতে যাবেন সেখানেও কোন কোম্পানিতে কাজ করবেন তাই না সেই কোম্পানির আগে আপনাকে চুক্তি করবে শ্রম চুক্তি বলা হয় এটিকে এবং এটিও সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে আপনার জাস্ট ওই  EPS আইডির মধ্যে ঢুকতে হবে এবং দেখতে হবে যে আপনার কাজগুলো কতটুকু অগ্রগতি হচ্ছে।

কোরিয়াতে যাওয়ার আগে কেন ১৪ দিনের ট্রেনিং করতে হয়

আপনার যখন রোস্টার হয়ে যাবে আপনি যখন শ্রম চুক্তির জন্য উপযুক্ত হবেন তখন আপনার এই সিসিবিআই ইসু করতে হবে যেটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করা হবে। এবং এরপর আপনাকে ১৪ দিনের ট্রেনিং করতে হবে। এই ট্রেনটি মূলত করানো হয় এর জন্য যাতে করে আপনি দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া তাদের কালচার তাদের কথাবার্তা ধরন ইত্যাদি আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে নিজের মধ্যে আয়ত্ত করতে পারেন এ কাজগুলো আপনাকে তারা খুব ভালোভাবে শিখিয়ে দেবে।

কোরিয়ান শিষ্টাচার কোরিয়ানদের রুলস কোরিয়ানের আইন কানুন সবকিছু বিষয়ে আপনাকে এখানে বিস্তারিত জানানো হবে। আর এই ট্রেনিংটা হয় বাংলাদেশ কোরিয়ান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার যেটা মিরপুরে দারুস সালামে রয়েছে সেই ট্রেনিং সেন্টারে মূলত এই ১৪ দিনের ট্রেনিংটি দেওয়া হয়। এই ১৪ দিনের ট্রেনিং করার পরে আপনি দক্ষিণ কোরিয়াতে আসতে পারবেন।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া আসার শর্ত সমূহ

  1. আপনি যদি এসএসসি পাশে উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলে আপনার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  2. আপনার অবশ্যই একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  3. আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  4. আপনাকে অবশ্যই কালার ব্লাইন্ড হতে হবে অর্থাৎ আপনার চোখে কোন প্রকারের সমস্যা থাকা চলবে না।
  5. আপনার নামে যদি কোন আইন প্রক্রিয়াকরণ অবস্থায় থাকে তাহলে আপনি দক্ষিণ করে আসতে পারবেন না।
  6. বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আপনি কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন কিনা অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য আপনি কোন প্রকারের বাধা সম্মুখীন রয়েছেন কিনা এটি দেখতে হবে।
  7. আপনি যদি মাদকাসক্ত না হন তাহলে আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় আসতে পারবেন আর মাদকাসক্ত হলে আসতে পারবেন না।
  8. শেষ যেই শর্তটি হচ্ছে আপনি যদি ইতিপূর্বে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রতারিত হন অর্থাৎ এর পূর্বে যদি আপনি দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পর সেখান থেকে কোন অপরাধের জন্য আপনাকে বের করে দেয়া হয় তাহলে আপনি আর দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারবেন না।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে। দক্ষিণ কোরিয়া যেতে মোট খরচ কত হয়

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে যে ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার মত খরচ হবে আমরা প্রথমদিকেই বলেছি এ টাকাটা আপনার কিভাবে খরচ হবে আসুন সে সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানা যাক। আপনার এই টাকাটা মূলত একবারই দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই এ টাকাটা আপনাকে ধাপে ধাপে দিতে হবে। 

প্রথমত আপনার যখন লটারিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তখন আপনাকে মূল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য একটি পে অর্ডার কাটতে হয়েছিল এই পে অর্ডার কাটার জন্য আপনাকে 2100 টাকার মতো দিতে হবে। এরপর আপনি যখন কোরিয়ান ভাষায় উত্তীর্ণ হবেন আপনি স্কিল টেস্টে উত্তীর্ণ হবেন এবং মেডিকেল করবেন এই মেডিকেল করার সময় গিয়ে আপনার খরচ হবে 2000 টাকার মতো দুই হাজার টাকা কিছু বেশি ধরেন দুই থেকে তিন হাজার টাকা লাগবে। 

 
এর পরবর্তী ধাপে যে টাকাটা খরচ হবে অর্থাৎ আপনার যখন সিসিবিআই চালু হবে তখন আপনাকে ৩৩ হাজার ৩৪ টাকা অথবা ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ করতে হবে। অর্থাৎ বুয়েসেলের সার্ভিস চার্জ বীমা চার্জ ইত্যাদি যে আনুষঙ্গিক চার্জ গুলো আছে সে সবগুলো মিলিয়ে আপনার এখানে ৩৫ হাজারের মতো খরচ হবে। এবং সর্বশেষ আপনার যে খরচটি হবে সেটি হচ্ছে বিমানের টিকিট কিনতে এখন বিমানের টিকিটের দাম কখন কি রকম থাকে এটা বিমান এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের ওয়েবসাইট থেকে আপনাদের জেনে নেওয়া ভালো হবে বলে আমি মনে করি। 

তবুও যদি একটি সারমর্ম ধারণা দিই ধরুন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য মোট কত টাকা খরচ হবে এবং কোন ধাপে কি পরিমান টাকা খরচ হতে পারে। যদিও এই পদ্ধতিটি পরিবর্তনশীল একেক সময় একেক রকম থাকে এই জিনিসগুলো করার আগে ভালোভাবে রিসার্চ করে নিবেন।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য কি কোন জামানত ফ্রি দেওয়া লাগে

আপনি যদি সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চান তাহলে আপনাকে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) প্রায় এক লক্ষ টাকার মতো জামানত ফ্রি দিতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে এক লক্ষ টাকা তাদেরকে দিতে হবে এই টাকাটা আপনারই থাকবে আপনি যখন আবার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসবেন এই টাকাটা আপনি আবার পেয়ে যাবেন। 

এই টাকাটা নেওয়ার একটাই উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনি যেন দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পর কোন বেআইনি কাজকর্মে জড়িয়ে না পড়েন। কারণ আপনি যখন এই টাকাটা বাংলাদেশে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) কাছে জমা করে রাখবেন তখন আপনার মাথায় একটু চিন্তা থাকবে যে আমার টাকাটা আর ফেরত পাবনা।


এই চিন্তা বা ভয়ে আপনি সেই দেশে গিয়ে কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম করবেন না এবং বাংলাদেশকে অন্য দেশের সামনে ছোট করবেন না বিধায় এই টাকাটা নেওয়া হয় আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় এখানে আপনাকে বাংলাদেশ সরকারকে কোন টাকা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে কিনা।

আর্টিকেল সম্পর্কিত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর । FAQs

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন: দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আমার কি ভিসা দরকার?

উত্তর: এটি আপনার জাতীয়তা এবং আপনার সফরের উদ্দেশ্য এবং সময়কালের উপর নির্ভর করে। নির্দিষ্ট ভিসার প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুগ্রহ করে নিকটস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস বা কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করুন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন: দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশের জন্য আমার কোন নথির প্রয়োজন?

উত্তর: সাধারণত, আপনার জাতীয়তা অনুযায়ী আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট, একটি সম্পূর্ণ আগমন কার্ড এবং যেকোনো প্রয়োজনীয় ভিসা নথির প্রয়োজন হবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন: দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যবহৃত মুদ্রা কি?

উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারী মুদ্রা দক্ষিণ কোরিয়ান ওন (KRW)। আপনার ভ্রমণের আগে কিছু মুদ্রা বিনিময় করা বা আপনি একবার পৌঁছে গেলে এটিএম থেকে টাকা তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন: দক্ষিণ কোরিয়াতে কি ইংরেজি ব্যাপকভাবে বলা হয়?

উত্তর: যদিও ইংরেজি অন্যান্য কিছু দেশের মতো সাধারণভাবে বলা হয় না, আপনি সাধারণত প্রধান পর্যটন এলাকা, হোটেল এবং রেস্তোরাঁয় ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে পারেন। কয়েকটি মৌলিক কোরিয়ান বাক্যাংশ শেখা সহায়ক হতে পারে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন: দক্ষিণ কোরিয়ার কাছাকাছি যাওয়ার সেরা উপায় কী?

উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়ার একটি দক্ষ পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ট্রেন, বাস এবং পাতাল রেল। পরিবহন অ্যাপ "কাকাওম্যাপ" রুট নেভিগেট করতে সহায়তা করতে পারে। ট্যাক্সিগুলিও ব্যাপকভাবে উপলব্ধ, তবে সেগুলি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে।

শেষ কথাঃ স্বল্প খরচে উচ্চ বেতনে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়

আশা করি আজকের এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে স্বল্প খরচের উচ্চ বেতনে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি পরার পরেও আপনাদের কোন জায়গায় বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার যথেষ্ট পরিমাণ চেষ্টা করব। এমনই নিত্য নতুন সব খবরা-খবর পাওয়ার জন্য পাশে থাকা বেল বাটনটি প্রেস করে ড্রিম আইটিসিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। ধন্যবাদ🥰

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url